গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার গুছিয়ে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দিবে, জনগণের সরকার গঠন করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালিয়ে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিএনপি এ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। শেষ কয়েক বছরে ২২ জনকে হত্যা করেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি ১৬ বছরে যে মূল্য দিয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। ছাত্রসমাজকে অভিনন্দন অভূতপূর্ব বিপ্লবের জন্য। এই বিপ্লবে হাজার খানেক ছাত্র জনতাকে গুলি করে মারা হয়েছে। ইতিহাস বড় নির্মম। বুঝিয়ে দিল ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ক্ষণস্থায়ী।
মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা অহংকারে সীমা লঙ্ঘন করেছিল। শেখ হাসিনাকে পালিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগারদের বলবো এখনও সময় আছে আপনারা আর ঝামেলা করবেন না, টিকতে পারবেন না। আওয়ামী লীগকে মানুষ আর দেখতে চায় না। সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ধোয়া তোলার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নেই, সবাই বাংলাদেশি। সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করে অস্থিতিশীল করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। ভালোয় ভালোয় ঝামেলা না করে আত্মসমর্পণ করেন। প্রতাপশালী মন্ত্রীরা ধরা পড়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী আইনে এদের বিচার করতে হবে গণহত্যার দায়ে। যারা টাকা লুট করে পাচার করেছে তাদের বিচার করতে হবে বলেও দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ঐক্যবদ্ধ থেকে আওয়ামী লীগের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে থাকবে ততক্ষণ সমর্থন থাকবে। খালেদা জিয়াসহ সকল নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ছাত্র জনতার ঐক্য সুদৃঢ় করে গণতন্ত্র সুসংহত করা হবে।
সভায় লুটপাটকারীদের প্রতিহত করতে বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সরকারের দোসর ব্যবসায়ীরা লুটপাট করে সব টাকা দেশের বাইরে পাঠিয়েছে। যত হত্যা করা হয়েছে, গুলি করা হয়েছে সবকিছুর পেছনে এইসব ব্যবসায়ীদের টাকা আছে। এদের ধরতে হবে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালালেও খালেদা জিয়া দেশ ছাড়েননি। চাঁদাবাজি যা চলছে এর সাথে বিএনপির কেউ জড়িত না। আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি, দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র রক্ষায় আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, গত ১৬ বছর নিপীড়ন নির্যাতনের মুখেও বিএনপির নেতাকর্মীরা পিছু হটেনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, যেভাবে ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে, এরপর শেখ হাসিনার আর রাজনীতি করার অধিকার নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।