মৌলভীবাজারের তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত
কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজার জেলার মনু ও ধলাই নদীর ১৩টি স্থানে বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। পৃথকভাবে মনু প্রকল্পের বাঁধের দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি প্রবেশ করে তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।
বন্যার কারণে সিলেটের সঙ্গে এবং জেলা সদরের সঙ্গে অন্যান্য উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অস্বাভাবিক ভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মনু নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি প্রবেশ করছে কুলাউড়া উপজেলার হাজিপুর, মিয়ারপাড়া, চকসালন। রাজনগর উপজেলার খাসপ্রেমনগর, একামধু, আদিনাবাদ, উজিরপুর ও কোনাগাঁও এলাকা দিয়ে। অপর দিকে ধলাই নদীর বাঁধ ভেঙে কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলাপুর ইউনিয়নের গঙ্গানগর, মোকাবিল, মাধবপুর ইউনিয়নের হিরামতি, আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা ও রহিমপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর বন্যার পানি প্রবেশ করছে। এসব এলাকার শতাধিক গ্রামের রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জেলার চারটি নদী মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ির পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল জানান, আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় মৌলভীবাজার শহরের কাছে মনু নদীর পানি চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৯ সেন্টিমিটার ও উজানে রেলওয়ে ব্রিজে বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারার শেরপুরে ১১ সেন্টিমিটার, জুড়ি নদীদে বিপৎসীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, আউশ ধানের ক্ষতির পাশাপাশি সদ্য রোপণ করা সাত উপজেলায় আমন ধান ও সবজির ক্ষতি হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যায়নি।
জেলা প্রশাসক ঊর্মি বিনতে সালামসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষে মাইকে প্রচারণা চালানো হয় শহরে বাসা-বাড়িতে রাতে নিচ তলায় যাতে কেই না থাকেন। পাশাপাশি মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারী জেলার বন্যা দুর্গত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। দুর্যোগপূর্ণ সময়ে সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে অতীতের মতো থাকবে। এ সময় তিনি উদ্ধার কাজ, ত্রাণ বিতরণ ও ক্ষতিগ্রস্ত সব বাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।