সাভারে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামি ৬৫ জন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ছায়াদ মাহমুদ খান সাদকে (১২) গুলি করে হত্যার ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৬৫ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সাভার মডেল থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলার বাদী নিহত শিক্ষার্থীর বাবা প্রবাসী বাহাদুর খান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান।
এ নিয়ে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে সাভার মডেল থানায় নয়টি মামলা দায়ের করা হলো।
শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. মাহমুদ উল হক, সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ২০ জুলাই সাভারের শাহীবাগ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পরিবারের সবার অলক্ষ্যে বাসার নিচে টিয়ারশেলের ধোয়ার দৃশ্য দেখতে গিয়ে বাম পায়ের উরুতে গুলিবিদ্ধ হন স্থানীয় জাবালে নূর দাখিল মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছায়াদ মাহমুদ খান সাদ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহত শিক্ষার্থীর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানার ধল্লা বাজার এলাকায়। নিহতের বাবা প্রবাসী বাহাদুর খান জানান, স্ত্রী হালিমা আক্তার, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তিনি শাহীবাগ এলাকায় ভাড়া থাকতেন। মূলত সন্তানদের লেখাপড়ার জন্যই সাভারে থাকতেন তিনি। তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে ছিল সাদ। বড় মেয়ে তাসলিমা খানম নাজনীন (২০) সাভারে গণবিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সাদ সাভারের শাহীবাগ এলাকায় জাবালে নূর দাখিল মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো। আর ছোট মেয়ে আফরোজা খানম নুসরাত (৮) একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাহাদুর খান আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে ছিল সাদ। বড় ইচ্ছে ছিল ছেলে কুরআনের হাফেজ হবে। এ জন্য স্কুলে ভর্তি না করে মাদ্রাসায় দিয়েছিলাম। দুই পাড়া কুরআন মুখস্থও করেছিল। কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। আমার ছেলের তো কোনো অপরাধ ছিল না, তাহলে কেন গুলিতে অকালেই ঝরে গেলো তার জীবন।’