যুবদলের ২ নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ছাত্র-জনতার
একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন নিউজ পোর্টালে গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশ পায় সংবাদ, যার শিরোনাম ছিল ‘প্রবাসীর বাসায় ডাকাতি করলেন যুবদল নেতারা’। সেই ‘সংবাদ প্রকাশের পর যুবদল নেতা বহিষ্কার’ শিরোনামে প্রকাশ হয় ফের প্রতিবেদন। এরপর প্রতিবাদ দিলে তাও প্রকাশ পায়, আবার পরে তা তুলেও নেয় নিউজ পোর্টাল কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) হলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা দাবি করেন, জাতীয় দৈনিকটি প্রকৃত ঘটনা যাচাই-বাছাই না করে খণ্ডিত ভিডিওচিত্র দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরে তার ফলোআপও করে। তারা বলেন, প্রতিবেদনে তথ্য বিকৃত করে অসত্য সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তারা কয়েকজন ছাত্র-জনতা ওই পত্রিকা অফিসে যোগাযোগ করে পুরো ঘটনা বুঝিয়ে বলেন এবং প্রমাণ দেখালে কর্তৃপক্ষ ৭ সেপ্টম্বর দুঃখ প্রকাশ করে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ছাপায়। তাদের কথা দেন তারা সংবাদটি সরিয়ে নেবে। কিন্তু ৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ সরিয়ে নেয়। ছাত্র-জনতার দাবি, অসত্য ও বিকৃত সংবাদ প্রকাশ প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে ওই দৈনিকটি ছাত্র হত্যার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের সাহায্য করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিশাত সুমিত। তিনি জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই যুবদলনেতা পল্টন থানায় জিডি করেছেন। এ সময় ভুক্তভোগী দুই যুবদলনেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিশাত সুমিত বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) আনুমানিক রাত ১২টায় জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে নাখালপাড়া এলাকার ছাপরা মসজিদ সংলগ্ন ওবায়দুল কাদেরের কথিত এপিএস নুরুল করিম জুয়েল ও তার ছোট ভাই পাভেলের বাসায় (তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন ১৮ ক পশ্চিম নাখালপাড়া) আওয়ামী লীগের কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসী ও পাভেলের অবস্থানের তথ্যের ব্যাপারে অবগত হয়ে ছাত্র-জনতা, স্থানীয় এলাকাবাসী এবং সাধারণ মানুষ বাড়ির আশপাশে অবস্থান নেয়।
সুমিত বলেন, পাভেলের বাসা থেকে এবং তার বাসা সংলগ্ন নাখালপাড়া রিকশা গ্যারেজের মাধ্যমে রিকশা বাহিনী তৈরি করে রিকশা আন্দোলন উসকে দেয়। এর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আনসার আন্দোলনে অর্থ সহায়তার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিদেশ থেকে নূরুল করিম জুয়েল নির্দেশনা দিয়ে এই বাসা থেকেই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু ব্যক্তিকে অর্থ সহায়তা দিয়ে আন্দোলন উসকে দিয়ে প্রতিবিপ্লব ঘটানোর পরিকল্পনা করা হয়। এ কারণেই উৎসুক স্থানীয় জনতা, ছাত্রসমাজ, সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে তল্লাশি অভিযান পরিচালিত হয়। জনতার উপস্থিতি টের পেয়ে বাসায় থাকা পাভেল বাহিনীর সন্ত্রাসীরা তাৎক্ষণিক পালিয়ে যায়।
সুমিত আরও বলেন, তল্লাশিকালে সেখানে বিপুল সরকারি ফাইল, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পাসপোর্ট, অলংকারের বেশ কিছু কালি বাক্স, ফাঁকা লাগেজ ব্যাগ দেখা যায়। ছত্র-জনতার অভিযানকালে বাসার গেটম্যান ও দারোয়ান সহযোগিতা করেন। এরপর বাসাটি দাঁরোয়ানের হেফাজতে রেখে এবং সিসিটিভি চালু অবস্থায় রেখে ছাত্র-জনতা বের হয়ে আসে। এ ঘটনা যাতে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে না পারে সে জন্য ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে রাখা হয় এবং মৌখিকভাবে ভেজগাঁও থানাকে জানানো হয়।
ওবাইদুল কাদেরের কথিত এপি এস নুরুল করিম জুয়েল ও তার ভাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলনের সময় তার ভাই পান্ডেল এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা চালিয়ে এসেছে ও ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনীকে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করেছে, তারা এখনও ছাত্র জনতার বিপ্লবের বিপক্ষে ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
ভুক্তভোগী দুই যুবদলনেতা হলেন আজাদ চৌধুরী নাহিদ ও আনোয়ার হোসেন অভি। নাহিদ হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের (পূর্ব) সাবেক ১ম যুগ্ম সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। আনোয়ার হোসেন অভি খিলগাঁও থানা যুবদলের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সচিব।