আলোকচিত্রে শহীদ আবু সাঈদের বীরত্বগাঁথা
শহীদ আবু সাঈদ–নামটি লেখা হয়েছে ইতিহাসের পাতায়। রক্তাক্ত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যু্ত্থানের অন্যতম নায়ক তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন মাত্রা পায় আবু সাঈদের মৃত্যুতে। তিনি যেন জ্বলন্ত অগ্নিশিখা হয়ে ওঠেন। তার ছবিই হয়ে ওঠে আন্দোলনের প্রতীক। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পেছনে আবু সাঈদের ভূমিকা ছিল অসামান্য। এবার সেই আবু সাঈদের ছবি নিয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে আয়োজিত হলো আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
আন্দোলনকালে আবু সাঈদকে নিয়ে তোলা ছবি নিয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতি সংঘের তত্ত্বাবধানে আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) জাফরপাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল। আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শেষ দিনে আজ ছিল দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড়। শিক্ষার্থী থেকে রিকশাচালক, শিশু-কিশোর থেকে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও আগ্রহের সঙ্গে প্রদর্শনীতে আসেন। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদের ছবি নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীতে আজ সকাল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করেন। দুই দিনের এই আয়োজন গতকাল বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে চলে আজ রোববার রাত পর্যন্ত। ফিতা কেটে আয়োজনের উদ্বোধন করেন আবু সাঈদের পিতা মকবুল হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন।
আবু সাঈদের জীবনের সেরা সময়কে ছবির অবয়বে ধরে রেখে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন ফটো সাংবাদিক আদর রহমানও। তিনি বলেন, ‘আমি ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৩০০ ছবি তুলেছি। এর মধ্যে বাছাইকৃত ৫০টি ছবি নিয়ে প্রদর্শনী করছি। আমরা শুধু আবু সাঈদের বুক চিতিয়ে থাকার সময় তার বুকে গুলি চালানোর ভাইরাল ছবিটি দেখেছি। কিন্তু, তাকে গুলি করা করার আগে পুলিশ কীভাবে বেধড়ক লাঠিপেটা করেছিল, সে ছবিগুলো কেউ দেখেনি। এই প্রদর্শনীতে আবু সাঈদের গুলি করার আগে ও পরের ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে। যদি আবু সাঈদকে নিয়ে ১০০ বছর পরেও গবেষণা করা হয়, তাহলে হয়তো এই ছবিগুলোই যথেষ্ট হবে।’
প্রদর্শনী উদ্বোধনের সময় আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলেকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের বিচার যেন হয়।’
আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘এই ছবিগুলো অপরাধীদের শনাক্ত করতে সহায়তা করবে এবং যারা আমার ভাইকে যেভাবে গুলি করে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।’