রাঙামাটিতে এবার দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত, ১৪৪ ধারা জারি
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এবার পার্বত্য শহর রাঙামাটিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা, ভাঙচুর ও নাশকতার ঘটনায় একজন নিহত এবং আহত হয়েছে অন্তত ৫০ জন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। হতাহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
আজ শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে রাঙামাটি শহরের জিমনেশিয়াম চত্বর থেকে কয়েক হাজার পাহাড়ি জনতার একটি মিছিল বের হয়। মিছিলকারীরা বনরূপায় পৌঁছে সেখানকার বাঙালিদের বেশকিছু দোকানপাট ও মসজিদে ভাঙচুর করেন। এ সময় তারা সড়কে থাকা বেশ কয়েকটি বাস-ট্রাক ও ট্যাক্সি ভাঙচুর করে। এরপরই লাঠিসোঠা হাতে এগিয়ে আসেন বাঙালিরা। তাদের পাল্টা হামলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাঁঠালতলীতে অবস্থিত মৈত্রী বিহার। বনরূপায় পাহাড়িদের মালিকানাধীন অন্তত দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। শহরের হ্যাপির মোড়ের দুদিকে অবস্থান নেয় পাহাড়ি ও বাঙালিরা।
এ ছাড়া আগুনে ফাইবার অপটিক ক্যাবল পুড়ে যাওয়ায় শহরে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ইয়েসনেটের পরিচালক মো. শাহীন৷
রাঙামাটি পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জামালউদ্দিন বলেন, ‘সকালে পাহাড়িদের একটি মিছিল বনরূপায় এসে ফিরে যাওয়ার সময় বিনা উসকানিতেই বনরূপায় দেদারসে বাঙালিদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গাড়ি ও মসজিদে হামলা, ভাঙচুর করে। এরপরই বাঙালি ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের পাল্টা ধাওয়া দেয়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটিতে সকালে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়। শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করেছে।
এদিকে, উভয়পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের রাঙামাটি সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাদিয়া আকতার। তিনি জানান, সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫০ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়-সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।