নিরাপত্তা চেয়ে মৎস্যজীবী দম্পতির সংবাদ সম্মেলন
কিশোরগঞ্জে জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক মৎস্যজীবী দম্পতি। মৎস্যজীবী রাম চরণ দাস ও তাঁর স্ত্রী অনিতা রাণী দাস জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার ভাটিনগর গ্রামের বাসিন্দা।
আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে জেলা শহরের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভাটিনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রাম চরণ দাস।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী অনিতা রাণী দাস ও মেয়ে অরুণজিতা দাস সোনিয়া (৭)।
লিখিত বক্তব্যে রাম চরণ দাস বলেন, তাঁর স্ত্রী অনিতা রানীর নামে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চলতি বছরের ২৪ জুন অষ্টগ্রাম উপজেলার চরদেওঘর ফিসারি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভাটিনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সে সময়কার সভাপতি ছিলেন অনিতা রাণী দাস। ৬৭৬ একর ১৮ শতাংশ আয়তনের ফিসারিটি বরাদ্দের পর থেকেই বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের মদদে একটি মহল তাদের ভয়-ভীতি ও বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল।
একপর্যায়ে গত ৩০ জুলাই অষ্টগ্রাম উপজেলার সদরে উপজেলা আওয়ামী লীগনেতা ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদ এবং বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরের নেতৃত্বে তাঁদের লোকজন মারধরসহ ব্যাংকের চেকবইয়ের পাঁচ-ছয়টি পাতায় ও একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায় করে নেন। সেই সঙ্গে প্রাণনাশের হুমকি দেন। অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এর প্রতিকার চাওয়া হলে তিনি ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁদের আসতে বলেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার তাঁরা ইউএনওর কার্যালয়ে গেলেও তিনি কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না পারায় ফেরার সময় দুপুর আড়াইটায় অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদ কমল এবং বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন ইউএনওর কার্যালয়ের নিচতলায় তাঁদের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা রাম চরণ দাসকে ধরে কিল-ঘুষি মারতে মারতে জোরপূর্বক ইউএনওর কার্যালয়ের কক্ষের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে তারা ফিসারি তাদের দিয়ে তাদের পক্ষে থাকার জন্য চাপ দিয়ে বলে, তাদের কথা না শুনলে তাঁদের পুড়িয়ে হত্যা করা হবে। এ সময় ইউএনও-ও তাদের পক্ষে কথা বলেন।
এ ঘটনার পরের দিন ২৯ সেপ্টেম্বর অষ্টগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন রাম চরণ দাস। কিন্তু পুলিশ এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিকার চেয়েছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদ কমল বলেন, রাম চরণ দাসের সঙ্গে আমাদের স্ট্যাম্পে চুক্তি রয়েছে। আমাদের এক কোটি টাকার শেয়ার আছে। আমরা ইউএনও অফিসে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটাইনি। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
অভিযোগের বিষয়ে বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, কেউ তাকে উসকিয়ে দিচ্ছে। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। সে যা বলছে, তা পুরোটাই মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. দিলশাদ জাহান বলেন, এগুলো মিথ্যা কথা। আমার সামনে কোনো কিছুই ঘটেনি।
অষ্টগ্রাম থানার ওসির দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক মোশাররফ বলেন, আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি।