স্বামীর মরদেহ ৯ টুকরো করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলেন দ্বিতীয় স্ত্রী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে শাবল দিয়ে স্বামী অরুণ মিয়ার (৭০) মাথায় আঘাত করেন মোমেনা বেগম। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অরুণ মিয়া। তার দেহ ৯ টুকরো করে পলিথিনে পেঁচিয়ে ইট মুড়িয়ে বাঁধেন। পরে পাশের বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। ঘটনাটি ঘটেছে বাঞ্ছারামপুরের ফরদাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ায়।
ঘটনার পাঁচ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) নিহতের ৯ টুকরো মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেকে আটক করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের ফরদাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ার অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রী প্রায় ৩৫ বছর আগে মারা যান। পরে একই গ্রামে তারু মিয়ার মেয়ে মোমেনা বেগমকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য কলহ লেগে থাকত। অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ঘরে লুৎফুর রহমান রুবেল নামে এক ছেলে রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে হয়। এদের মধ্যে এক ছেলে দুবাইয়ে কর্মরত অবস্থায় মারা যান।
২০১৭ সাল থেকে অরুণ মিয়া তার প্রথম স্ত্রীর ছেলে লুৎফর রহমান রুবেলের সঙ্গে গাজীপুরে বাস করছিলেন। কয়েক মাস আগে এলাকাবাসী সালিশের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা করে দেন। এরপর থেকে অরুণ মিয়া বেশিরভাগ সময় গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন। গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে অরুণ মিয়া নিখোঁজ হন। পরে ছেলে লুৎফর রহমান রুবেল সোমবার বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অরুণ মিয়ার পাশের বাড়ির সৌদি প্রবাসী মনির হোসেনের সেফটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হতে দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। টর্চ লাইট দিয়ে ট্যাংকের ভেতরে দেখে পলিথিন মোড়ানো কয়েকটি বস্তু। বিষয়টি জানিয়ে থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে রাত ১০টার দিকে ইট দিয়ে মোড়ানো ৯টি পলিথিনের প্যাকেট উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, প্যাকেট খুললে বাবার মরদেহ শনাক্ত করে ছেলে লুৎফর। পরে নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগম, তার মেয়ে ও ছেলেকে আটক করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন মোমেনা বেগম। মোমেনা বলেন, শুক্রবার বিকেলে কলহের একপর্যায়ে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে অরুণ মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে লাশ নিজেই ৯ টুকরো করে পলিথিনে পেঁচিয়ে ইট মুড়িয়ে পাশের বাড়ির মনিরের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার পাল জানান, অরুণ মিয়া নিহতের ঘটনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগম, তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে লাকীকে আটক করা হয়েছে।