শুধু নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন হতে হবে : ফয়জুল করীম
দেশের শৃঙ্খলা, সঠিক ইসলামী শাসন, দুর্নীতি প্রতিরোধ, ধনী-গরিব ভেদাভেদ বাতিল করে নতুন পদ্ধতির নির্বাচন দাবি করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।
আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে ইসলামী আন্দোলন ঝিনাইদহ জেলা শাখার গণসমাবেশের এসব কথা বলেন আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।
গণঅভ্যত্থানে গণহত্যায় জড়িতদের বিচার, হতাহতদের ক্ষতিপূরণ, দুর্নীতিবাজদের বিচার ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ সাত দফা দাবি তুলে ধরেন আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।
ফয়জুল করীম বলেন, দেশের অর্থ পাচারকারীদের বিচার করে বিদেশে পাঠানো সমুদয় অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে আনা ও সংখানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক । মাত্র ২৫ পরিবারের কাছে এত পরিমাণ টাকা যে সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছেও সেই পরিমাণ টাকা নেই। জাল-জালিয়াতি ও দুর্নীতি করে এত টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সব মানুষের মাথার উপর এখন দেড় লাখ টাকার ঋণ চেপে বসেছে। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই। ভালো মানুষ সংসদে গেলে দেশের মানুষের উপকার ছাড়া ক্ষতি নেই। সংসদকে অকার্যকর করে ফেলেছিল ফ্যাসিষ্ট সরকার।
নায়েবে আমির আরও বলেন, ৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠন করালাম। ৭১-এর ঘোষণা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায় বিচার। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র গঠন করেছিলাম। কিন্তু ৭২-এর সংবিধানে ভারতের সংবিধানের যে মুল চার নীতি—গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরেপক্ষতা, জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই মূল চার নীতি বাংলাদেশের মুসলমানদের চার নীতি নয়, বরং ভারতের চাপিয়ে দেওয়া চার নীতি। ভেবেছিলাম এবার শান্তি পাব-মুক্তি পাব। কিন্তু কী পেলাম। ৫৩ বছরে দেখালাম সামাজিক ন্যায়বিচার নেই, সাম্যতা নেই। এ অবস্থা চললে গরিবরা আরও গরিব হবে, ধনীরা আরও ধনী হবে।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, শুধু নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন হতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন হলো নির্বাচন পদ্ধতি। প্রাপ্ত ভোট অনুপাতে আসন নির্ধারণ হবে। ব্যক্তিকে ভোট দিবে না মানুষ মার্কায় ভোট দেবে। তবেই মানুষ শাস্তি পাবে, বৈষম্যর শিকার হবে না। শান্তিতে থাকবে। আমরা একটি সাম্যর বাংলাদেশ চাই। যেখানে সব ধর্ম মত ও পথের মানুষ নিজেদের অধিকার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। আমরা চাই না নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক। দখলবাজদের স্থান হবে না। দখলবাজি চলতে দেওয়া হবে না। ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় কোনো বৈষম্য থাকে না।
সংগঠনের জেলা সভাপতি ডা, এইচ এম মোমতাজুল করীমের সভপতিত্বে ও সেক্রেটারি প্রভাষক মুাওলানা শিহাব উদ্দীনের সঞ্চলানায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মওলানা শোয়াইব হোসেন, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা শাখার সহসভাপতি মাস্টার শরীফুল ইসলামসহ অনেকে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিপুল নেতাকর্মী, সমর্থক হাতপাখা নিয়ে যোগ দেন এ সমাবেশে।