শেখ হাসিনা বাকশালকে নতুন আঙ্গিকে করেছিলেন : রিজভী
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনকালে বিচারকরা অনেকেই রাজনীতিবিদদের মতো কথা বলেছেন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের কথা শুনে মনে হতো তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাকি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, আমরা তার মধ্যে কোন পার্থক্য দেখতে পাইনি। কর্তৃত্ববাদী সরকার তার কর্তৃত্ব নিশ্চিত করতে গিয়ে আইন ও বিচার প্রশাসনকে একাকার করেছিল। শেখ হাসিনা ঠিক বাকশালকে নতুন আঙ্গিকে করেছিলেন।’
আজ শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রিজভী এসব কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, আমরা তো দেখেছি প্রধান বিচারপতিকে তরবারি উপহার দিচ্ছেন গোয়েন্দা বাহিনীর সাবেক প্রধান। ছাত্রলীগের ছেলেরা গিয়ে ফুল দিচ্ছে প্রধান বিচারপতিকে। পৃথিবীতে কোথাও নজির আছে এই ধরনের ঘটনার? অর্থাৎ এটাই হচ্ছে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী সরকার। কর্তৃত্ববাদী সরকার তার কর্তৃত্ব নিশ্চিত করতে গিয়ে আইন ও বিচার প্রশাসনকে একাকার করেছিলেন। শেখ হাসিনা ঠিক বাকশালকে নতুন আঙ্গিকে করেছিলেন।
রিজভী বলেন, একদিকে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে অন্যদিকে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে নিশ্চিত করতে হবে। এই দুটিকে সামনে রেখেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। সীমান্তে প্রতিদিন হত্যা হচ্ছে। একদিন দুই দিন পর পর ঠাকুরগাঁয়ের সীমান্ত, লালমনিরহাটের সীমান্ত, হবিগঞ্জের সীমান্ত রক্তাক্ত হচ্ছে। ফেলানির মতো অনেক কিশোরীর লাশ কাঁটাতারের ওপর ঝুলেছে। কিন্তু গত সরকার তার একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারেনি। পার্শ্ববর্তী দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এই কাজগুলো করছে। এতটাই নতজানু ছিল শেখ হাসিনা সীমান্ত রক্তাক্ত হলেও একটা প্রতিবাদ করতেও সাহস পায়নি। নিজের দেশের গণতন্ত্রের জন্য যারা কথা বলেছে, তাদের জায়গা হয়েছে আয়নাঘরে অথবা তাদেরকে বছরের পর বছর কাটাতে হয়েছে কারাগারে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এদেশের গণতন্ত্রের প্রতি জাতীয়তাবাদের প্রতি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি গণতন্ত্রের জন্য আজীবন লড়াই সংগ্রাম করেছেন, তাঁকে একটি জরাজীর্ণ কারাগারের মধ্যে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। যাঁর স্বামী এদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন, যিনি এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ছিলেন, তাঁর সহধর্মিণী আপসহীন নেত্রীকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল কারাগারে বছরের পর বছর। সেরকম পরিস্থিতি যেন বাংলাদেশে আর না হয়, সে কারণে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রকে মজবুত করতে আইনের শাসন রুল অফ ল এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অপরিহার্য। মানুষের শেষ আশ্রয় হচ্ছে বিচার বিভাগ।’
এসময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জহুরুল হক, কর্নেল তৌহিদ পাঠান, কর্নেল আব্দুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুল রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।