বাবার অটোরিকশায় নানাবাড়ি যাওয়ার পথে বাসচাপায় ২ শিশু নিহত
সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। পেছনে তার ছেলে-মেয়ে বসা। ভাই বোন গল্প করছিল। অনেক দিন পর নানাবাড়ি যাওয়ার আনন্দ তাদের চোখেমুখে। তবে নানা বাড়ি নয়, বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় পরপারে পাড়ি দিতে হলো ভাই-বোনকে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই ভাই বোন দেবিদ্বার উপজেলা হোসেনপুর গ্রামের অটোরিকশার চালক জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে জুনায়েদ (১২) ও মেয়ে ফাহিমা আক্তার (৯)। জুনায়েদ জাফরগঞ্জ কোরআনিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ও তার বোন ফাহিমা হোসেনপুর নুরানি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একটি বাস অন্য ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে সিএনজি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। সিএনজিটি অটোরিকশা সড়ক থেকে ছিটকে পরে। এতে ঘটনাস্থলে জুনায়েদ মারা যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ফাহিমাও মারা যায়। এর পরপরই উত্তেজিত জনতা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে।
সিএনজিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে আমার সন্তানরা বায়না ধরে দুজনকে নানার বাড়ি দিয়ে আসতে। সারাদিন সিএনজি চালানোর পর আমি সন্ধ্যায় তাদের নিয়ে রওনা হই। যাওয়ার পথে কুমিল্লাগামী সিটিং সার্ভিস বাসের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। আমার চোখের সামনে আমার দুই ছেলে-মেয়ে মারা যায়।’
দেবিদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, উত্তেজিত লোকজন নিউ সুগন্ধা পরিবহণের পাঁচটি বাস ভাঙচুর করেছে। পুলিশ গিয়ে তাদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। যতটুকু শুনেছি দুর্ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আরো দুই থেকে তিনজন আহত হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার (এসপি) খাইরুল আলম বলেন, একটি যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুই মাদরাসা শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন দুটিকে উদ্ধার করে। তবে বাসচালক পালিয়ে গেছেন।