লিমার হাত ধরে স্বাবলম্বী হচ্ছেন গ্রামের শত শত নারী

২০১৫ সালে ‘লিমাস বুটিকস’ নামে ফেসবুক পেজ খুলে হাতে তৈরি পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন ঝিনাইদহের মেয়ে মাহমুদা নাসরিন লিমা। এই ব্যবসায় তিনি যুক্ত করেন নিজ গ্রামের নারীদের। ‘লিমাস বুটিকসের’ হাতে তৈরি নকশি কাঁথা, বিছানার চাদর, মেয়েদের থ্রিপিস ক্রেতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। লিমার হাত ধরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন তার গ্রামের নারীরাও।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বেথুলি গ্রামের মোশাররফ হোসেন ও সোনালী বেগম দম্পত্তির একমাত্র মেয়ে মাহমুদা নাসরিন লিমা। ২০০৭ সালে অনার্স পড়ুয়া লিমা বাবা-মায়ের পছন্দে বিয়ে করেন। বিয়ের পর বর্তমানে তিনি থাকছেন রাজধানীর উত্তরায়। নিজের লেখাপড়া, সংসার ও সন্তান সামলানোর পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার প্রবল ইচ্ছা থেকে ২০১৫ সালে তিনি শুরু করেন ‘লিমাস বুটিকস’। প্রায় ১০ বছরের ব্যবধানে তার প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি এখন সর্বত্র। ৩ লাখ ১৪ হাজার মানুষ ফেসবুকে তার পেজ অনুসরণ করেন। পণ্যের গণগত মাণে সন্তুষ্ট ক্রেতারা। কেউ কেউ আবার লিমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
সফল নারী উদ্যোক্তা লিমা যাত্রা শুরু করেন ২০০৯ সালে। মাঝে ঝড়-ঝাপটা এলেও তিনি উতরে গেছেন। এই সফল নারী উদ্যোক্তা বলেন, ‘শুরুতে আমার যাত্রা সহজ না হলেও আমি থেমে যাইনি, ভেঙে পড়িনি। যার কারণে হয়ত আমি দাঁড়াতে পেরেছি। আজ ভাবতেই ভালো লাগে আমি স্বাবলম্বী, আমি নারী, আমি পারি। তাছাড়া ৭৫০ জন নারী আজ আমার মাধ্যমে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছে, এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে? ভবিষ্যতে আরও কাজ করতে চাই। আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে চাই।’
অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ক্যাটাগরিতে বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা পান লিমা। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা পান তিনি।

সরেজমিনে লিমার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, হাতে তৈরি নকশিকাঁথা, বিছানার চাঁদর, মেয়েদের থ্রিপিসসহ নানা ধরনের পণ্য রয়েছে। প্রায় ৫০টি গ্রামের ৭৫০ জন নারী লিমাস বুটিকসের পণ্য তৈরিতে কাজ করেন। এসব কাজের দেখাশোনা করেন মা সোনালী বেগম।
লিমা বুটিকসে কাজ করা উম্মে কুলসুম নামের এক নারী বলেন, ‘বাড়িতে অবসর সময়ে কাঁথা সেলাই করি। নিয়মিত কাঁথা সেলাই করে লিমাস বুটিকসে বিক্রয় করে উপার্জন করি।’
স্বাবলম্বী নারী মাহমুদা নাসরিন লিমার বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেদারুল ইসলাম বলেন, তার কাজ প্রশংসার দাবি রাখে। তার কোনো সহযোগিতা লাগলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।