বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে হাতপাখার প্রার্থীর মামলা

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনি ফল বাতিল ও ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী দলের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মু. ফয়জুল করিমকে মেয়র ঘোষণা দেওয়ার জন্য আদালতে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন সৈয়দ মু. ফয়জুল করিম।
মামলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহসহ প্রতিদ্বন্দ্বী ছয়জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির বলেন, আদালত আমাদের আর্জি শুনেছেন। আমরা আদালতকে জানিয়েছি, স্বৈরাচার সরকার নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মু. ফয়জুল করিম জয়ী হলেও তাঁকে পরাজিত ঘোষণা করে। তাকে প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিহত করেছে স্বৈরাচারের লোকজন। তার ওপর হামলা হয়েছে। এসব বিষয়ে প্রতিকার চাইলেও তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, তিনি তো (হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মু. ফয়জুল করমি) ইন্তেকাল করেনি। এই ইন্তেকাল কমিশন হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীকে পরিকল্পিতভাবে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের হয়ে পরাজিত ঘোষণা করেছে। তখন আইনি ব্যবস্থা এমন ছিল যে আমরা চাইলেও কোথাও প্রতিকার পাইনি। ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
আইনজীবী আরও বলেন, বর্তমানে বরিশাল সিটি করপোরেশন প্রশাসন দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এতে নগরবাসী কোনো নাগরিক সেবা পাচ্ছে না। আমরা চাই ২০২৩ সালের বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ঘোষণা করে আদালত জনগণের প্রতিনিধি মুফতি সৈয়দ মু. ফয়জুল করিমকে বিজয়ী ঘোষণা করবেন।
মামলার অপর বিবাদীরা হলেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু, হরিণ প্রতীকের আলী হোসেন হাওলাদার, হাতি প্রতীকের আসাদুজ্জামান, লাঙল প্রতীকের ইকবাল হোসেন তাপস এবং টেবিলঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন।
আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির আরও বলেন, আদালত আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। পরবর্তী শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরবেন।
২০২৩ সালের ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন অপর ছয় প্রার্থী। নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মু. ফয়জুল করিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিতর্কিত মন্তব্য করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। যা নিয়ে সারা দেশে সমালোচনা শুরু হয় এবং তাঁর পদত্যাগের দাবি ওঠে। পরবর্তী সময় হাতপাখার প্রার্থীর কাছে ক্ষমা চান সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ওই নির্বাচনে প্রকাশিত ফলাফলে বিজয়ী প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ পান ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট। নিকটতম প্রতীদ্বন্দ্বী মুফতি সৈয়দ মু. ফয়জুল করমি পান ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট। ফলাফল নিয়ে সেই সময়েই তুমুল বিতর্ক দেখা দেয়।