দেশে আরও ১০ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের লক্ষ্য সরকারের
দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির লক্ষ্যে যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। নতুন করে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে আরও ১২টি এক্সপ্রেসওয়ে ও ১০টি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আশুলিয়া হয়ে সাভার ইপিজেড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ এবং ঢাকা-জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভূভুলতা-মদনপুর প্রবেশ-নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বালিয়াপুর থেকে নিমতলী-কেরানীগঞ্জ-ফতুল্লা-বন্দর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ৩৯.২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে বিভিন্ন মহাসড়কে এক হাজার ৪৩৯টি সেতু নির্মাণ অথবা পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে এবং ৮৫১.৬২ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগরী ও তৎসংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ও পরিবেশ উন্নয়নে ছয়টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এরইমধ্যে এমআরটি লাইন-৬ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চালু করা হয়েছে, যা দ্রুতগামী, দূষণমুক্ত, সময়সাশ্রয়ী, অত্যাধুনিক নগর পরিবহন হিসেবে নারী-পুরুষ সবার কাছে বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চল, বিশেষ করে উত্তর-মধ্যাঞ্চলের সংযোগ সৃষ্টি হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম শহরে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে একাধিক এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল দ্রুততম সময়ে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে এবং কক্সবাজার বিমানবন্দর ও ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে ও টেক্সিওয়ে উন্নত ও দীর্ঘ করা হয়েছে। তিনি বলেন, খুলনা থেকে মোংলা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত ৬৪.৭৫ কিমি ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার নতুন রেল যোগাযোগ চালু হওয়ায় ওই সেকশনটি ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে এবং উপ-আঞ্চলিক করিডোরের একটি বড় অংশ হিসেবে কাজ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রায় সীমিত আকারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমানে ১০.৫ মিটার ড্রাফটবিশিষ্ট ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ এ বন্দরে চলাচল করছে। এ ছাড়া মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।