কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকায় নেতার পদত্যাগ
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকায় পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নেতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও লিখিত চিঠির মাধ্যমে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
গতকাল রোববার শাহবাগে অবস্থান নেন কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীরা। রাত প্রায় পৌনে ৮টার দিকে পুলিশ শাহবাগ থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশ একের পর এক কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে, জলকামান দিয়ে পানি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ওপর। কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে আটকও করে। ওই ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি আছেন অনেক আন্দোলনকারী। শিক্ষার্থীরা শাহবাগ ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে যোগ দিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়।
এরই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার পদত্যাগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তিনজন নেতা। তাঁদের দাবি, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অনেক নেতাই কোটা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন।
পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফ, শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক শাখা ছাত্রলীগের উপ-অপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক আছিবুর রহমান ও ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ হাসান সুজন।
ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁরা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সমর্থন রয়েছে অধিকাংশ ছাত্রলীগ নেতার। পুলিশের হামলায় গতকাল আহত হয়েছেন ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবাল রৌশনী।
ফেসবুকে ট্যুরিজম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘ছাত্রলীগ জাতির পিতার নিজ হাতে গড়া সংগঠন। ছাত্রলীগ ডাকসুর ভূমিকা পালন করে। ছাত্রলীগ ছাত্রদের অধিকারে কাজ করে। ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বন্ধু। যথেষ্ট। ছাত্রলীগের ভূমিকা কী দেখা গেল। এই ছাত্রলীগ কোন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ করে জানি না। আমার বঙ্গবন্ধু আলাদা। তাই সজ্ঞানে আমি ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করছি। আর না, অনেক হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. বোরহান উদ্দীন বলেন, ‘আমি শুনেছি সে (সাইফ) পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। আমি এখনো পদত্যাগপত্র হাতে পাইনি। এ ছাড়া কোটা সংস্কার চেয়ে ছাত্রলীগের আন্দোলন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের অনেক নেতাই আহত হয়েছেন।’
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক আছিবুর রহমান পদত্যাগপত্রে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁরা ফোনের লাইন কেটে দেন।