ভুয়া ফেসবুক আইডিতে বিব্রত চম্পা
জনপ্রিয় অভিনেত্রী গুলশান আরা চম্পা। একসময় চলচ্চিত্রে দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন। ‘তিন কন্যা’ তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। তিন কন্যার বাকি দুই কন্যাও তাঁরই বড় দুই বোন ববিতা ও সুচন্দা। অর্জন করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও।
বেশ আধুনিক মানুষ হিসেবে পরিচিত এই নায়িকার নামে রয়েছে একটি ফেসবুক আইডি। বন্ধুর তালিকায় রয়েছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর, পরিচালক বদিউল আলম খোকনসহ চলচ্চিত্র অভিনেতা-অভিনেত্রী ও গণমাধ্যমকর্মীরা। ওই আইডিতে ৩৫ হাজারের বেশি ফলোয়ার রয়েছে। পোস্ট করা হয়েছে চম্পার অনেক ছবি। দেখে যে কারো মনে হবে এটি আসল আইডি। তবে সত্যি কথা হচ্ছে, কোনো ফেসবুক আইডি ব্যবহার করেন না চম্পা। এমনকি কোনোদিনই তিনি কোনো ফেসবুক আইডি খোলেননি।
সম্প্রতি করোনাভাইরাস ও সরকার প্রসঙ্গে বিভ্রন্তিমূলক বেশ কিছু লেখা প্রকাশ হয়েছে ওই আইডি থেকে। বিষয়টি নিয়ে চম্পা বেশ বিব্রত। করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমলে বিষয়টি নিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করবেন বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন বর্ষীয়ান এ অভিনেত্রী।
চম্পা বলেন, ‘আমার কোনো ফেসবুক আইডি নেই, কখনো ছিল না। তবে আমার নামে একটি ফেক আইডি রয়েছে। সম্প্রতি সেই আইডি থেকে করোনাভাইরাস ও সরকারকে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই বিব্রত। এখন করোনার কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। না হলে বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিতাম। করোনার প্রকোপ কমলেই আমি থানায় গিয়ে এই আইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ করব।’
চম্পা আরো বলেন, ‘ফেসবুক একেবারেই নিজস্ব মতামত প্রকাশের জায়গা। যারা ফেক আইডি খুলে ব্যবহার করে, তাঁদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। আর এই আইডিতে অনেকেই আছেন আমার পরিচিত। তাঁদের আমি অনুরোধ করব, আপনারা এই আইডিতে রিপোর্ট করুন। কারণ আপনাদের সঙ্গেও এই আইডি থেকে প্রতারণা করা হতে পারে। তখন বিষয়টি হবে আরো লজ্জাজনক।’
চম্পা বলেন, ‘আমি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করি কথা বলার জন্য। এটা সময়ের প্রয়োজনে। নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়, ফেসবুকে দেওয়ার মতো এতটা সময় আসলে আমার থাকে না। আপনারা গণমাধ্যমকর্মীরা আছেন। আপনাদের সঙ্গে আমার সব সময় যোগাযোগ হয়। জানার মতো কোনো খবর থাকলে তা আপনারাই জানিয়ে দেবেন। কেউ যদি এই আইডি থেকে প্রতারিত হয়ে থাকেন, ক্ষমা করবেন। আর কেউ যেন প্রতারিত না হয়, তাই এই খবরটি নিজের মতো ছড়িয়ে দিন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সবাই ভালো থাকবেন, নিজের ঘরে অবস্থান করবেন, সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মেনে চলবেন।’
মডেলিং দিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু গুলশান আরা চম্পার। এরপর বেশ কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করেন। শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘তিন কন্যা’র মাধ্যমে চম্পা চলচ্চিত্রজগতে পদার্পণ করেন। সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দ্বীপ রায়ের ‘টার্গেট’ ও বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘লালদরজা’ সিনেমাতে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি। গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি।
১২ বছরের ক্যারিয়ারে একশর বেশি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন চম্পা। এখনো করছেন। এ পর্যন্ত তিনি তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। দুবার লাভ করেন শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে।