অনুসন্ধান : পাকিস্তানকে কখনো ৪৫ কোটি রুপি দেননি শাহরুখ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টেলিভিশন প্রতিবেদনের একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর আরো একবার নেটিজেনদের তোপের মুখে পড়েছেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান। তবে যে অভিযোগে এ তোপ, সেটি ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’।
আজ শনিবার (৪ এপ্রিল) হিন্দুস্তান টাইমস প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওই ক্লিপটি ইন্ডিয়া টিভির, যেখানে পাকিস্তানকে শাহরুখের ৪৫ কোটি রুপি অনুদান দেওয়ার ব্যাপারে সঞ্চালককে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। তবে অনুসন্ধান বলছে, সেটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপ, যা এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পর নেটিজেনদের আক্রমণের মুখে পড়েছেন শাহরুখ খান। বহু টুইট প্রকাশিত হয়েছে এরই মধ্যে। টুইটার ব্যবহারকারী অনেকের অভিযোগ, মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় শাহরুখ পাকিস্তানকে অর্থসহায়তা করছেন, ভারতকে নয়।
দেখুন কয়েকটি টুইট :
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ভিডিও ২০১৭ সালের একটি পুরোনো প্রতিবেদনের কাটা অংশ। তখন অভিযোগ করা হয়েছিল, শাহরুখ পাকিস্তানকে অনুদান দিয়েছেন। ২০১৭ সালে পাকিস্তানে একটি তেলের ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ২১৯ জন। তখন গুঞ্জন ছড়িয়েছিল, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় শাহরুখ খান ৪৫ কোটি রুপি অনুদান দিয়েছেন। সেই গুঞ্জনও ভুয়া ছিল।
দ্য ল্যালানটপ ডটকমের অনুসন্ধান বলছে, ইন্ডিয়া টিভির ওই প্রতিবেদনের অকর্তিত পুরো ভিডিও পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান ওই গুঞ্জন সাফ উড়িয়ে দেন। এটা একদম পরিষ্কার যে ২০১৭ সালে বা বর্তমানে পাকিস্তানকে কোনো ধরনের অনুদান দেননি শাহরুখ খান।
বাস্তবতা হলো, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় শাহরুখ খান ও তাঁর প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কেয়ার তহবিল, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলসহ বিভিন্ন তহবিলে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
যেখানে অনুদান দিচ্ছেন শাহরুখ
১. পিএম-কেয়ারস ফান্ড : আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) পিএম-কেয়ারস ফান্ডে অনুদান দেবে।
২. মহারাষ্ট্র মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল : রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্ট মহারাষ্ট্র মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
৩. স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পিপিই : পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে কেকেআর ও মীর ফাউন্ডেশন এবং ৫০ হাজার পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) দেবে।
৪. এক সাথ দি আর্থ ফাউন্ডেশন : মুম্বাইয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার পরিবারকে প্রতিদিন অন্তত এক মাস খাদ্যসামগ্রী দেবে মীর ফাউন্ডেশন ও এক সাথ।
৫. রুটি ফাউন্ডেশন : মীর ফাউন্ডেশন ও রুটি ফাউন্ডেশন যৌথভাবে অন্তত এক মাস ১০ হাজার মানুষকে খাদ্যসহায়তা দেবে।
৬. ওয়ার্কিং পিপল’স চার্টার : দিল্লির আড়াই হাজার দিনমজুরকে অন্তত এক মাস নিত্যপ্রয়োজনীয় ও মুদিসামগ্রী যৌথভাবে সরবরাহ করবে মীর ফাউন্ডেশন ও ওয়ার্কিং পিপল’স চার্টার।
৭. এসিড আক্রান্তদের সহায়তা : প্রতি মাসে ১০০ জনেরও বেশি এসিড আক্রান্তকে বৃত্তি দেবে মীর ফাউন্ডেশন, যা তাঁদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করবে। আক্রান্তরা উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরাখন্ডের অধিবাসী।