আগে খেতে পারিনি, এখন খাওয়া মিস করতে চাই না : শাবনূর

Looks like you've blocked notifications!
চিত্রনায়িকা শাবনূর। ছবি : এনটিভি অনলাইন

নব্বইয়ের দশকে বাংলা চলচ্চিত্রের সাড়াজাগানো নায়িকা শাবনূর। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী অভিনয় থেকে দূরে আছেন বহুদিন হলো। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে সপরিবারে বসবাস করছেন। তবে নাড়ির টানে প্রতিবছরই দেশে আসেন। ক্যামেরার সামনে না দাঁড়ালেও চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

নায়িকা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শারীরিক ফিটনেস জরুরি। অভিনয় থেকে দূরে থাকায় সেটা অবশ্য হারিয়েছেন। একসময় টানা শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন, এখন ব্যস্ত সংসার সামলাতে। গতকাল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে একান্তে কথা হয় নায়িকার।

২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী অনিক মাহমুদকে বিয়ে করেন শাবনূর। বিয়ের দুই বছর পরে তিনি স্বামীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর শাবনূরের ঘর আলো করে আসে ছেলে আইজান। এখন ছেলেকে নিয়েই যত ধ্যান তাঁর।

চলচ্চিত্র অঙ্গনে পা রাখার আগের স্মৃতি উচ্চারণ করেন শাবনূর। বলেন, ‘চলচ্চিত্রে আসার আগে ববিতা আপা, কবরী আপার ছবি আয়নার পেছনে দেখে পুলকিত হতাম। সাজগোজ করার সময় তাঁদের ছবির সঙ্গে কথা বলতাম। যখন নিজের ছবি আয়নার পেছনে দেখলাম, তখন মনে অনেক আনন্দ হয়েছিল, ভালো লাগা কাজ করত। এটাকে মানুষের ভালোবাসা ভেবেছি, নিজের মধ্যে শক্তি তৈরি হয়েছে। কখনো মনে অহংকার আসেনি।’

আক্ষেপ করে শাবনূর বলেন, ‘এখন আর গ্রামের মানুষ সেসব আয়না খুব একটা ব্যবহার করে না। আমি প্রায়ই গ্রামের দিকে ঘুরতে যাই। এমন আয়না চোখে পড়ে না।’

কাজে ফিরবেন, এমন গুঞ্জন বেশ কয়েক বছর ধরেই শোনা যায় এফডিসির অলিগলিতে। আসলেই কি কাজে ফিরবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে শাবনূর বলেন, ‘আমি তো কাজের মধ্যেই আছি। একসময় কাজ ছিল অভিনয় করা, আর এখন কাজ হচ্ছে ছেলেকে মানুষ করা। যখন যে কাজটি করতে হয়, আমি সেই কাজটি সঠিকভাবে করতে চেষ্টা করি।’

ফের ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন? নায়িকার সাফ জবাব, ‘আসলে অভিনয় করার জন্য এখন আর ক্যমেরার সামনে দাঁড়াতে ইচ্ছে করে না। এখন অনেকটাই মুটিয়ে গেছি। এই অবস্থায় ক্যামেরার সামনে কেমন করে দাঁড়াব?’

কৌতুক করে শাবনূর বলেন, ‘তা ছাড়া আমি অভিনয় করার সময় লম্বা সময় না খেয়ে ছিলাম। এই খাওয়া যাবে না, সেই খাওয়া যাবে না—এমন নিয়ম মেনে নিজেকে ঠিক রেখে কাজ করেছি। যেহেতু একসময় খেতে পারিনি, তাই এখন আর খাওয়াটা মিস করতে চাই না।’

এবার কত দিনের জন্য দেশে এলেন? শাবনূর বলেন, ‘অনেক দিনই আছি, দেশে অনেক ভালো লাগছে। কোনো আড্ডার খবর পেলেই ছুটে যাচ্ছি। সবার সঙ্গে আনন্দে সময় কাটাচ্ছি। যত দিন ভালো লাগবে তত দিন থাকব। তবে শীত শেষ হওয়ার আগে যাচ্ছি না, এটা শিওর।’

প্রখ্যাত পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক হয় শাবনূরের। প্রথম ছবি ব্যর্থ হলেও পরে সালমান শাহের সঙ্গে জুটি গড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। একে একে এ জুটি সুপারহিট ছবি দিতে থাকেন।

সালমানের অকালমৃত্যুতে সাময়িকভাবে শাবনূরের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়লেও তাঁর চিরায়ত বাঙালি প্রেমিকার ইমেজ এবং অসাধারণ অভিনয়ক্ষমতা তাঁকে দর্শক-হৃদয়ে শক্ত আসন গড়তে সাহায্য করে। পরে রিয়াজ, শাকিল খান, ফেরদৌস ও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি গড়ে অসংখ্য ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় ছবি উপহার দেন।

২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘দুই নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাবনূর।