আজ নূতনের জন্মদিন

Looks like you've blocked notifications!
বর্ষীয়ান অভিনেত্রী নূতন। ছবি : এনটিভি অনলাইন

সাড়ে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন বর্ষীয়ান নূতন। ১৯৬৯ সালে মোস্তফা মেহমুদ পরিচালিত ‘নতুন প্রভাত’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রশিল্পে অভিষেক ঘটে তাঁর। ১৯৯১ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘স্ত্রীর পাওনা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন নূতন। শৈশবে গান দিয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হলেও পরে নৃত্য এবং মঞ্চ অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন নূতন। আজকের এই দিনে (৫ মার্চ) ময়মনসিংহে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

তবে এখন আর ঘটা করে জন্মদিন পালন করেন না নূতন। নিজের মতো করেই জন্মদিনটি কাটাতে পছন্দ তাঁর। এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে নূতন বলেন, ‘আমার মনে হয়, এখন আমাদের জন্মদিন পালন করাটা কেমন যেন দেখায়। বাচ্চাদের জন্মদিন পালন করি সেটা অন্য জিনিস, ভালো লাগে। যখন চলচ্চিত্রে ব্যস্ত সময় পার করেছি, তখনো ব্যস্ততার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন তেমন পালন করা হয়নি। তবে শুটিং ইউনিটের কেউ জানলে জন্মদিনটা বেশ ঘটা করেই পালন করা হতো।’

ফেলে আসা দিনগুলো স্মরণ করে নূতন বলেন, ‘শুটিংয়ে কেউ যদি আমরা জন্মদিনটা জানত, তবে তাঁরা আমাকে সারপ্রাইজ দিতে কেক কাটত। সেই স্মৃতিগুলো এখনো আনন্দ দেয়।’

নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের প্রতি প্রত্যাশার কথা জানাতেও ভোলেননি নূতন। তিনি মনে করেন, চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে কাজ করতে হবে। কেউ যদি ভালোবেসে কাজ করেন, তাহলে তাঁর ছবিও দেখবেন দর্শক। নতুনদের হাত ধরেই আবারও ঘুরে দাঁড়াবে চলচ্চিত্র।

প্রথম ছবিতেই সফলতা লাভ করেছিলেন নূতন। ১৯৭০ সালে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র মুক্তি পায় এবং তিনি এখনো অভিনয় করে যাচ্ছেন। নূতনের আরেকটি পরিচয় হলো, তিনি একজন সফল চলচ্চিত্র প্রযোজক। বড় বোন গীতার হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান নূতন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের আগে থেকেই তিনি গান, নাচ ও অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

দেখুন পুরো সাক্ষাৎকার :

শৈশবে নৃত্যের প্রতি আগ্রহ থেকে নাচ শেখেন নূতন। এরপর ময়মনসিংহের মঞ্চনাটকের সঙ্গে জড়িত হন এবং সফলতা অর্জন করেন। নূতনের বড় বোন গীতা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন। তিনি নূতনকে নায়িকা বানানোর আগ্রহ নিয়ে অভিনেত্রী সুমিতা দেবীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সুমিতা দেবী ‘নতুন প্রভাত’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নতুন নায়ক-নায়িকার খোঁজে ছিলেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল, নায়িকার নাম থাকবে নূতন এবং নায়কের নাম হবে প্রভাত।

নায়িকা হিসেবে নূতন নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি পারিবারিক নাম রত্না থেকে ‘নূতন’ হয়ে যান। ‘প্রভাত’ নামে নতুন একজন অভিনেতা নির্বাচিত হলেও পরে তিনি অভিনয় করেননি, ফলে নূতনের বিপরীতে অভিনয় করেন আনসার। ‘নতুন প্রভাত’ পরিচালনা করেছিলেন মোস্তফা মেহমুদ। আর এভাবেই ১৯৭০ সালে রুপালি পর্দায় নূতনের অভিষেক ঘটে। প্রথম ছবিতেই নূতন পরিচিতি অর্জনে সক্ষম হন।

স্বাধীনতা যুদ্ধপরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’-এ অভিনয় করে প্রশংসিত হন নূতন। কিছুদিন নিয়মিত অভিনয় করলেও প্রায় পাঁচ বছর তিনি চলচ্চিত্র থেকে দূরে ছিলেন। নায়করাজ রাজ্জাক পরিচালিত ‘পাগলা রাজা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নূতন আবারও নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেন।

‘স্ত্রীর পাওনা’ চলচ্চিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য নূতন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন। তাঁর প্রযোজনা সংস্থার নাম বিএন প্রোডাকশন। তাঁর প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘চান সুরুজ’। এরপর ‘কাবিন’, ‘সাহস’, ‘রূপের রাণী গানের রাজা’, ‘নাচে নাগিন’, ‘শত্রু ধ্বংস’সহ বেশ কয়েকটি ছবি প্রযোজনা করেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবনে নূতন প্রযোজক-পরিচালক রুহুল আমিন বাবুলকে বিয়ে করেন।