আমার জন্মদিনে ইমন বেশি আয়োজন করত : সামিরা
বেঁচে থাকলে আজ ৪৯ বছরে পা রাখতেন ঢাকাই সিনেমার অমর নায়ক সালমান শাহ। বেঁচে থাকলে হয়তো আজ এই করোনাকালেও আয়োজন থাকত ইস্কাটনের বাসায়, এফডিসিসহ দেশজুড়ে। ভক্তরা হয়তো কেক কাটত মহল্লায় মহল্লায়।
তবে এই ‘হয়তো’ ভেবে তো আর জীবন চলে না। তাই সালমান শাহ বেঁচে থাকতে কীভাবে নিজের জন্মদিন পালন করতেন, তা জানার চেষ্টা করেছে এনটিভি অনলাইন। ২৫ বছরের জীবনে সালমান শাহর পাঁচটি জন্মদিন কেটেছে স্ত্রী সামিরা হকের সঙ্গে।
কীভাবে কেটেছে ‘স্বপ্নের নায়ক’-এর সেসব জন্মদিন, এনটিভি অনলাইনের এমন প্রশ্নে সামিরা বলেন, ‘আমার সঙ্গে ইমনের (সালমান শাহ) পরিচয় ১৯৯০ সালে। এরপর শেষ জন্মদিন ছাড়া বাকি পাঁচটা জন্মদিন আমরা একসঙ্গে কাটিয়েছি। কার্ড আর চিঠি দেওয়া-নেওয়া হতো আমাদের মধ্যে। তবে সহজেই চমকে দেওয়া যেত না ইমনকে। আমি হয়তো কোনো সারপ্রাইজ দেব ভাবছি, সে সেটা ধরে ফেলত। তবে আমার জন্মদিনেই আয়োজন বেশি করত ইমন। আমাকে আবাক করে দিতে চাইত। একবার তো দামি গাড়ি দিয়ে চমকে দিয়েছিল, সে গল্প সবার জানা।’
সামিরা আরো বলেন, ‘একবারের কথা মনে আছে, সেবারই ইমনকে কিছুটা সারপ্রাইজ করতে পেরেছিলাম বলে মনে হয়। ইস্কাটনের বাসায় আমি আর ইমনের ছোট ভাই গেস্টরুম বেলুন দিয়ে সাজিয়েছিলাম। সঙ্গে একটা কেক আর কিছু মোমবাতি ছিল। ইমন রাতে বাসায় এলে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম। এরপর ওকে খাবারের টেবিলের দিকে নিয়ে গেলাম। ও ভেবেছিল, হয়তো খাবার রেঁধেছি। টেবিলে যাওয়ার পর ও দেখল, গেস্টরুমে অনেক বেলুন আর কেক। সে সময় ওর চোখেমুখে সে কী ভীষণ আনন্দ ছিল, এটা এখন বলে বোঝাতে পারব না। তবে আজ এসব স্মৃতি আমার কাছে সবচেয়ে বেদনার।’
সালমান শাহ ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জে জন্ম নেন। তাঁর পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন হলেও সিনেমার পর্দায় তিনি ছিলেন শুধুই সালমান শাহ। বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরীর বড় ছেলে শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন সালমান শাহ হয়েছিলেন ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে।
ঢাকাই সিনেমার নায়ক হওয়ার আগে সালমান শাহর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল টেলিভিশন নাটক দিয়ে। তবে ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় অভিনয়ের পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি সালমান শাহকে। চার বছরের ক্যারিয়ারে মাত্র ২৭ সিনেমায় অভিনয় করে পেয়েছেন আকাশসমান জনপ্রিয়তা। উপহার দিয়ে গেছেন বাংলা সিনেমার এক সোনালি অধ্যায়।