এক নম্বরে অক্ষয় কুমার, পাঁচে সালমান খান

Looks like you've blocked notifications!
বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার ও সালমান খান। ছবি : সংগৃহীত

২০১৫ সালে ৫০০ কোটির ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন সুপারস্টার সালমান খান। তাঁর দুটি ছবি ভারতের বক্স অফিসে সংগ্রহ করেছিল ৫০০ কোটি রুপির বেশি। এরপর শুরু হয় প্রতিযোগিতা। কোন তারকা এই ক্লাবে ঢুকবেন, তা নিয়ে শুরু হয় নানা জল্পনা। পরে ঢোকেনও কেউ কেউ। তবে এবার সব রেকর্ড ভেঙে দিলেন অক্ষয় কুমার। তৈরি করলেন নতুন ইতিহাস। এখন অক্ষয় ৭০০ কোটির ক্লাবে।

বাণিজ্য বিশ্লেষকেরা বলছেন, তারকাখ্যাতির পাশাপাশি এখন যোগ হয়েছে ছবির কনটেন্ট বা আধেয়। ছবির বিষয়বস্তু ভালো হলে দর্শক পছন্দ করছেন সেই ছবি। শুধু তারকাখ্যাতি দিয়ে বক্স অফিস উতরানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

আর ২০১৯ সালে এ ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছেন অক্ষয় কুমার। তাঁর ছবির বিষয়বস্তু ভালো, তারকাখ্যাতিও রয়েছে। সব মিলিয়ে এখন অক্ষয় মানেই বক্স অফিস হিট। অক্ষয়ের টানা ছয়টি সিনেমা শতকোটির ক্লাবে ঢুকেছে। গেল বছর সুপারহিট চারটি সিনেমা।

আর সেই দৌড়ে পিছিয়ে পড়ছেন সুপারস্টার সালমান খানও। যদিও গত বছর মাত্র দুটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ভাইজানের, আয়ও কম করেনি। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে শীর্ষে উঠে গেছেন অক্ষয় কুমার। এ ছাড়া হৃতিক রোশন, রিতেশ দেশমুখ, আয়ুষ্মান খুরানা, হালের টাইগার শ্রফও কম যাচ্ছেন না। তাঁদের সিনেমাও বক্স অফিস হিট হচ্ছে।

বলিউড হাঙ্গামার বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টিভির অনলাইন সংস্করণের প্রতিবেদন জানায়, ২০১৯ সালে পরপর চারটি ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন অক্ষয় কুমার—‘কেসারি’, ‘মিশন মঙ্গল’, ‘হাউসফুল ফোর’ ও ‘গুড নিউজ’। আর এ চার ছবি ২০১৯ সালে ভারতের বক্স অফিসে আয় করেছে ৭০০ কোটি রুপির বেশি। এর মধ্য দিয়ে নতুন এক অধ্যায় তৈরি হলো। বাড়ল প্রত্যাশা। ২০২০ সালে যেসব ছবি মুক্তি পাবে, যে তারকাদের ছবি মুক্তি পাবে, তাঁদের ওপর নিশ্চিত চাপ তৈরি হবে। বক্স অফিসে হিটের জন্য শীর্ষ তারকাদের নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করতে হবে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর অক্ষয়ের ছবিগুলো মোট আয় করেছে ৭৩৫.৪২ কোটি রুপি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন হৃতিক রোশান। তাঁর ‘সুপার থার্টি’ ও ‘ওয়ার’ খুব ভালো ব্যবসা করেছে, মোট সংগ্রহ ৪৬৪.৮৫ কোটি রুপি।

তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন রিতেশ দেশমুখ। ২০১৯ সালে বক্স অফিসে ‘ধামাল’ সৃষ্টি করেছেন তিনি। তাঁর তিন ছবি ‘টোটাল ধামাল’, ‘হাউসফুল ফোর’ ও ‘মারজাওয়া’ সংগ্রহ করেছে ৩৯৬ কোটি রুপির বেশি। এর পরেই রয়েছেন টাইগার শ্রফ, তাঁর ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার টু’ এবং ‘ওয়ার’ সংগ্রহ করেছে ৩৮৭.০২০ কোটি রুপি।

সুপারস্টার সালমান খান তালিকার পঞ্চমে অবস্থান করছেন। গেল বছর মুক্তি পেয়েছে তাঁর দুটি ছবি ‘ভারত’ ও ‘দাবাং থ্রি’। বক্স অফিসে আয় করেছে ৩৫৬ কোটি রুপির বেশি। এর পরে রয়েছেন আয়ুষ্মান খুরানা, তাঁর ‘আর্টিকেল ফিফটিন’, ‘ড্রিম গার্ল’ ও ‘বালা’ আয় করেছে ৩২৪.৫২০ কোটি রুপি।

২০১৫ সালে ৫০০ কোটির ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন সুপারস্টার সালমান খান। ওই বছর ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ও ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’ ব্যাপক ব্যবসা করে। ২০১৮ সালে রণবীর সিং ঢোকেন ওই ক্লাবে, তাঁর ‘পদ্মাবত’ ও ‘সিম্বা’ ব্যাপক ব্যবসা করে বক্স অফিসে।

বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে চলচ্চিত্র সমালোচক ও বাণিজ্য বিশ্লেষক তারান আদর্শ বলেছেন, ভারতে বিনোদন-ব্যবসা দিন দিন বাড়ছে। এখন অভিনেতারা শুধু ছবির কনটেন্টের (আধেয়) ওপরই জোর দিচ্ছেন না, বক্স অফিসের ওপরও জোর দিচ্ছেন। কনটেন্ট ভালো হতে হবে, কারণ দর্শক সেটা পছন্দ করেন। আর দর্শক পছন্দ করলেই তার প্রভাব পড়বে বক্স অফিসে।

‘অক্ষয় গেল বছর চারটি সিনেমা করেছেন, আর সবগুলো ছবিই ভিন্ন ঘরানার। ভিন্ন বিষয়ের ছবি সবাইকে স্পর্শ করেছে,’ যোগ করেন তারান। তিনি আরো বলেন, সংখ্যার খেলা বদলাতে থাকবে। ধারাবাহিকতা তখনই থাকবে, যখন তারকারা ভিন্ন কিছু দেবেন।

২০২০ সালে মুক্তির পাইপলাইনে রয়েছে ‘৮৩’, ‘বাঘি থ্রি’, ‘আংরেজি মিডিয়াম’, ‘চেহরে’, ‘রাধে : ইউর মোস্ট ওয়ান্টেড ভাই’, ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’ রিমেক, ‘লক্ষ্মী বোম’, ‘শমসেরা’, ‘লাল সিং চাড্ডা’ ও ‘বচ্চন পান্ডে’। চলতি বছর হবে ভিন্ন ধারার, ভিন্ন গল্পের ছবির বছর। আর বিভিন্ন প্রকল্পে এবারও প্রধান সারিতে থাকবেন অক্ষয় কুমার, আমির খান ও সালমান খানের মতো তারকারা। বেশ জমজমাট সংঘর্ষ হবে বক্স অফিসে। 

২০২০ সাল শুধু তারকাখ্যাতির পরীক্ষার বছরই হবে না, ৭০০ কোটির ক্লাব আর সৃষ্টি হবে কি হবে না, সে ধারণাও দেবে।

আর তাই বাণিজ্য বিশ্লেষক তারান আদর্শের অভিমত, বক্স অফিসের সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে ছবির কনটেন্টের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তাঁর মতে, শুধু শৈল্পিক ছবি ভালো সংখ্যা অর্জন করতে পারবে না, দর্শককে বিনোদনও দিতে হবে। আর তাই শিল্পের সঙ্গে বিনোদন যুক্ত করতে হবে। দেখা যাক, নতুন বছরটা কেমন যায় বলিউডের!