কলকাতা করলে ভালো, আমরা করলে দোষ : শাহীন
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে স্বল্পবসনায় কোনো নায়িকাকে প্রদর্শন করা হলে অনেকেই সমালোচনায় মেতে ওঠেন। প্রায় একই পোশাক কলকাতার কোনো নায়িকা পরলে তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন একই সমালোচনাকারী। এমন ঘটনার উদাহরণ টেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক শাহীন সুমন।
ঘটনার সূত্রপাত শাহীন সুমন পরিচালিত ‘পাগলের মতো ভালোবাসি’ ছবিকে ঘিরে। ছবিটি সেন্সর বোর্ডে তোলা হলে দুটি দৃশ্য ও একটি গান কর্তন করা হয়। অভিযোগ, ওই দুটি দৃশ্য ও গানটিতে ‘অশ্লীলতা’ রয়েছে।
তবে ওই সেন্সর বোর্ডের ওই ‘আপত্তি’ মানতে নারাজ পরিচালক শাহীন সুমন। তাঁর দাবি, ওই দুটি দৃশ্য এবং গানের দৃশ্য বা কথায় ‘আপত্তিকর’ কিছু ছিল না।
‘পাগলের মতো ভালোবাসি’ ছবির কর্তিত আইটেম গানটির কথা ছিল এমন—‘দোকান খুলে বসে আছি কাস্টমার নেই/পিরিতের বাজার ভালো না।’ গানের কথাকে আপত্তিকর মনে করেছে সেন্সর বোর্ড। তাই গানটি বাদ দিতে বলেছেন কর্তাব্যক্তিরা। এ ছাড়া সিনেমাটির দুটি দৃশ্য এমন—চামচ দিয়ে চোখ তুলে ফেলা হচ্ছে ও ট্র্যাফিক সিগন্যালে গুলি করে মানুষ মেরে ফেলা হচ্ছে। এ দৃশ্য দুটিও ছেঁটে ফেলতে পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছে সেন্সর বোর্ড।
তবে পরিচালক শাহীন সুমনের দাবি, ‘আইটেম গানের কথাগুলো আপত্তিকর নয়, এমনকি কোনো আপত্তিকর দৃশ্যও ছিল না। আর যে দুটি দৃশ্য কেটে ফেলার জন্য বলা হয়েছে, সেই দৃশ্যগুলো গল্পের প্রয়োজনে এসেছে। আমরা যদি নিজেদের গল্পগুলো সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে না পারি, তবে আমাদের সিনেমা কেউ দেখবে না।’
এনটিভি অনলাইনকে শাহীন আরো বলেন, ‘কলকাতার ছবিতে সব সময় আইটেম গান বা সিক্যুয়েন্সে এমন কিছু থাকে, যা আমাদের ভাষায় অশ্লীল। অথচ সেই ছবি আমাদের দেশে মুক্তি দিলে সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। ওই ছবিগুলো আমাদের সিনেমা হলেই মুক্তি পায়। তবে আমাদের তৈরি ছবিতে সামান্য কারণেই কর্তন করা হয়। কলকাতা করলে দোষ নেই, আমরা অল্প করলেও দোষ।’
‘আসলে আমাদের দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ করা সম্ভব নয়। কারণ গল্প উপস্থাপন করা যাচ্ছে না। আর গল্প উপস্থাপন করতে না পারলে আমরা ছবিতে কী দেখাব? পরিচালক হিসেবে আমি বিষয়টির প্রতিবাদ করছি,’ যোগ করেন শাহীন।
‘পাগলের মতো ভালোবাসি’ সিনেমায় চিত্রনায়িকা অধরার বিপরীতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক আসিফ নূর ও চিত্রনায়ক সুমিত। ত্রিভুজ প্রেমের এ সিনেমার গল্প লিখেছেন পরিচালক শাহীন সুমন। এতে আরো অভিনয় করেছেন সাদেক বাচ্চু, জয় রাজ প্রমুখ। নৃত্য পরিচালনা করেছেন কালু ও নুহরাজ।
২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি, রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় সিনেমাটির মহরত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কুমিল্লার কোটবাড়িতে গানের দৃশ্যায়নের মাধ্যমে ক্যামেরা খোলেন পরিচালক। তারপর কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সিনেমাটির দৃশ্যধারণ করা হয়।