কাজ পাচ্ছিলেন না সরোজ খান, প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সালমান
বলিউডের কিংবদন্তি কোরিওগ্রাফার সরোজ খান দীর্ঘদিন তাঁর মেধা ও মনন দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। আজ শুক্রবার (৩ জুলাই) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান খ্যাতিমান এই শিল্পী। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি ‘দিল হি তো হ্যায়’ ছবির ‘নিগাহেঁ মিলনে কো জি চাহতা হ্যায়’ গানের কোরিওগ্রাফ করেছিলেন। কয়েক দশকের ক্যারিয়ারে তিনি হয়ে ওঠেন বি-টাউনের শীর্ষ কোরিওগ্রাফার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে জানা যায়, কয়েক দশক ধরে স্বীয় দক্ষতা ও নৈপুণ্যের মাধ্যমে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন সরোজ খান। শুক্রবার সরোজ ৭১ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর ভাগ্নে জগওয়ানি বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে হাসপাতালে হার্ট অ্যাটাকের কারণে তিনি মারা যান।’
গত বছর এক সাক্ষাৎকারে সরোজ জানিয়েছিলেন, চলচ্চিত্রে কাজ পাচ্ছেন না তিনি। বলিউড সুপারস্টার সালমান খান যখন তাঁর দুর্দশার কথা যখন শুনলেন, তখন তিনি একটি ছবির জন্য তাঁকে চুক্তিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
“যখন আমরা দেখা করেছি, সালমান আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমি আজকাল কী করছি? আমি তাঁকে সত্যিই বলেছি যে আমার কোনো কাজ নেই আর আমি তরুণ অভিনেত্রীদের ভারতীয় ধ্রুপদি নৃত্য শেখাচ্ছি। এটি শুনে তিনি বললেন, ‘এখন আপনি আমার সঙ্গে কাজ করবেন।’ আমি জানি, তিনি কথা রাখার মতো মানুষ, তাই তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পালন করবেন,” বলেছিলেন সরোজ। ভারতের সংবাদমাধ্যম মিড ডে-র উদ্ধৃতি দিয়ে এই তথ্য জানানো হয় প্রতিবেদনে।
কয়েক বছর আগে রেডিফের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সরোজ ১৯৮৮ সালে ‘তেজাব’ ছবিটিকে তাঁকে বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার কৃতিত্ব দিয়েছিলেন। ‘আমি এত জনপ্রিয় হয়েছিলাম যে অভিনেত্রীরা আমার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিলেন। এখন সময় এসে গেছে, তারা আমাকে চায় না। নৃত্যে তীব্র গতি রয়েছে আমার, যা এখনকার অভিনেত্রীদের করতে খুব কষ্ট হয়,’ বলেছিলেন সরোজ।
সরোজ আরো বলেন, ‘আমার মনে হয়, অভিনেত্রীরা এখন আমার সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করেন না; তবে তাঁরা এটি কখনো বলেননি। কিন্তু আমি কম কাজ পেতে শুরু করেছি।’
১৯৪৮ সালে জন্ম নেওয়া সরোজ খানের বলিউড ক্যারিয়ার শুরু হয় শিশুশিল্পী হিসেবে। পঞ্চাশের দশকে ব্যাকআপ নৃত্যশিল্পী বা ‘এক্সট্রা’ হিসেবে বেশ কিছু সিনেমায় কাজ করেন সরোজ খান।
এরপর সত্তর দশকে সহকারী নৃত্যপরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন সরোজ খান। কোরিওগ্রাফার হিসেবে দুই হাজারের বেশি গানের কোরিওগ্রাফি করেছেন তিনি। আশি দশকে শ্রীদেবী ও মাধুরী দীক্ষিতের মতো বলিউড তারকাদের সঙ্গে কাজ শুরুর পর বলিউডে সরোজ খান নামটি পরিচিত হয়ে ওঠে।
‘দেবদাস’ সিনেমার ‘দোলা রে দোলা’, ‘তেজাব’ সিনেমার ‘এক দো তিন’ গানগুলোর কোরিওগ্রাফি করে সরোজ খান বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন।