চট্টগ্রামের মিনা যেভাবে কবরী হয়ে উঠেছিলেন
ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মিনা পাল। বয়স ১৩। থাকেন চট্টগ্রামে। একটা কিশোরীর ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তাঁকে আবিষ্কার করেছিলেন পরিচালক সুভাষ দত্ত। সিনেমার নাম ‘সুতরাং’, সময় ১৯৬৪ সাল। এরপর আর পেছনে ফিরতে হয়নি; চট্টগ্রামের সেই মিনা পাল হয়ে উঠেছিলেন ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী কবরী।
২০১৭ সালে জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই গল্পে কবরী জানিয়েছিলেন, ‘যখন কাজ শুরু করি, তখন আমার বয়স ১৩ বছর। ক্লাস সিক্সে পড়ি। সুভাষ দত্ত একটা কিশোরীর ভূমিকার জন্য খুঁজে আমাকে পেয়ে যান। সাংস্কৃতিক পরিবারে মানুষ হয়েছি। আমার মা পুঁথি পড়তেন, ভাইবোনেরা নাচতেন-গাইতেন, ছোট ভাই তবলা বাজাতেন। আমি নাচ করতাম। তবে আগে অভিনয় করিনি। যখন আমি অফার পেলাম, তখন বাবা খুবই উৎসাহিত হলেন। মা দিতে চাননি। উনি বললেন, এর পড়াশোনা নষ্ট হয়ে যাবে। পরিবার একটু রক্ষণশীল তো ছিলই। আমার মায়ের ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যায়। তিনি অনেক দূর পড়াশোনা করতে পারেনন। তাই তাঁর খুব শখ ছিল, মেয়েকে পড়াবেন।’
প্রথম সিনেমার সময়ই তাঁর নতুন নাম হয় কবরী। ২০১১ সালে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের প্রথম সিনেমার গল্পে কবরী জানিয়েছিলেন, ‘চোখ তুলে তাকাতে সাহস পেতাম না, খুব লজ্জা পেতাম। সব দত্তদা (সুভাষ দত্ত) শিখিয়েছেন। কিন্তু প্রথম সিনেমার (সুতরাং) পর আমাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।’
এর পরের দুই দশকে ‘রংবাজ’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘দ্বীপ নেভে নাই’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সুজন সখী’, ‘সারেং বৌ’-এর মতো বহু ব্যবসাসফল এবং আলোচিত সিনেমায় প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেন কবরী।