জন্মদিনে ছেলের সারপ্রাইজ
একসময় নামি নৃত্যশিল্পী ছিলেন। ঢালিউডে অভিষেক ১৯৭৮ সালে। এরই মধ্যে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। আশি দশকে তিনি ছিলেন জনপ্রিয় নায়িকা। বলছি নায়িকা অঞ্জনা সুলতানার কথা। সাবলীল অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। গুণী এই শিল্পী আজকের এই দিনে (২৭ জুন) ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।
বেশ কয়েক বছর ধরে অঞ্জনার জন্মদিন উদযাপন শুরু হয় ছেলে মণি নিষাদের সারপ্রাইজ দিয়ে। এ বছরও তাই হয়েছে। অঞ্জনা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাত ১২টা বাজার পাঁচ মিনিট আগেই আমার ছেলে কেক নিয়ে হাজির, ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সেটা কাটা হয়ে গেছে। সবার আগেই যেন সে আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিতে পারে। রাতে গোপনে কেক এনে সে নিজের রুমে রেখে দেয় আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। আমি এটি উপভোগ করি।’
অঞ্জনা বলেন, ‘কেক কাটা শেষ করে মোবাইল ফোন হাতে নিতেই দেখি সবাই আমাকে ফেসবুকে উইশ করছে। চোখে পানি চলে আসল। সবাই আমাকে এখনো এত ভালোবাসে? সত্যি, আমার জন্ম সার্থক হয়েছে। সকাল থেকে হাতে ফোন নিয়ে বসে আছি। সবাই ফোনে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, কথা বলছি। আমার প্রিয় কিছু মানুষ আছে যাদের সঙ্গে হয়তো সারা বছর কথা হয় না, তবে এই দিনে শুভেচ্ছা জানান। এগুলো আমার কাছে অনেক আনন্দের। তবে এর মধ্যে রয়েছে দুঃখও।’
কীসের দুঃখ? অঞ্জন বলেন, ‘করোনার কারণে আমরা কেউ ভালো নেই। সবাই নিজের জায়গায় বন্দি সময় পার করছি। অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এগুলো মনে হলে নিজেকে অসহায় মনে হয়, অনেক কষ্ট হয়।’
অঞ্জনা সুলতানা অভিনয় ক্যারিয়ারে ৩৫০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে কার্যকরী পরিষদের সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিনয়, নৃত্য ও মডেলিং, তিন মাধ্যমেই অঞ্জনা সফলতার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’। কিন্তু দর্শকের সামনে তিনি প্রথম আসেন মাসুদ পারভেজের ‘দস্যু বনহূর’ সিনেমার মাধ্যমে। নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে সর্বাধিক ৩০টি সিনেমার নায়িকাও অঞ্জনা। এর মধ্যে ‘অশিক্ষিত’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘আশার আলো’, ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’, ‘বৌরানী’, ‘সোনার হরিণ’, ‘মানা’, ‘রামরহিমজন’, ‘সানাই’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ও ‘অভিযান’ উল্লেখযোগ্য। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান অঞ্জনা। এ ছাড়া দুবার বাচসাস, দুবার নৃত্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।