জায়েদের কল্যাণে ঘুচল ইমদাদুলের ভিক্ষার জীবন

Looks like you've blocked notifications!
জায়েদ খানের কল্যাণে ভিক্ষার জীবন ঘুচেছে পিরোজপুরের ইমদাদুল শিকদারের। ছবি : সংগৃহীত

পিরোজপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণচূড়া ভাইজোড়া গ্রামের মো. ইমদাদুল শিকদার জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। ৪০ বছর ভিক্ষা করেই কাটছিল জীবন। মা, স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে মানুষের কাছে হাত পেতে চলছিল সংসার। তবে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর মানুষ এড়িয়ে যায়। অনেকটা অর্ধাহারে-অনাহারেই কাটছিল দিন। এমন সময় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জায়েদ খানের কল্যাণমূলক সংগঠন ‘সাপোর্ট’। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ইমদাদুলকে দেওয়া হয়েছে দোকান।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান উপস্থিত থেকে দোকান উদ্বোধন করেন, সঙ্গে ছিলেন ‘সাপোর্ট’-এর সদস্যরা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে এনটিভি অনলাইনকে ইমদাদুল বলেন, ‘ভিক্ষা করেই জীবন পার করে দিচ্ছিলাম। তার পরও চেষ্টা করেছি আমার সন্তান যেন ভিক্ষা না করে। আমার বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে আর ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। কোনোভাবে টেনেটুনে সংসার চালাচ্ছিলাম। তবে করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে মানুষ তেমন ভিক্ষা দিতে চায় না। অনেকেই এমনভাবে তাকায়, যেন আমি করোনা নিয়ে তার সামনে গিয়েছি। নিয়মিত যারা ভিক্ষা দিত তারাও যেন আজ করোনার কারণে অসহায়। এমন অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছিলাম। আজ জায়েদ ভাইয়ের ‘সাপোর্ট’-এর পক্ষ থেকে আমাকে দোকান করে দিয়েছে। জানি না এই ঋণ কীভাবে শোধ করব।’

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি নিজে উপস্থিত থেকে আজ সকালে দোকান উদ্বোধন করেছি। আমার কাছে বিষয়টি অনেক ভালো লেগেছে। জায়েদ খানের এ বিষয়গুলো মানবতার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমি যত দিন এই পিরোজপুরে আছি, তত দিন এই সংগঠনের পাশে আছি। আমি সাধ্যমতো শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক সহযোগিতা করে যাব।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জায়েদ খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমাকে পিরোজপুরের ‘সাপোর্ট’-এর এক ভাই বিষয়টি জানালেন। করোনার পর থেকে ইমদাদুল ভাই ভিক্ষা পাচ্ছেন না। বর্তমানে তাঁর মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান না খেয়ে দিন পার করছে। এমন খবর শোনার পর আমার মনে হলো তাঁদের জন্য কিছু করা প্রয়োজন। তবে পাঁচ কেজি চাল বা ডাল দিলে হয়তো এক সপ্তাহ খেতে পারতেন, তারপর কী হবে। তখন থেকেই মনে হচ্ছিল এমন কিছু করি যেন তাঁর বাকি জীবন কোনো রকমে চলে যায়। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম, একটি দোকান করে দেই, যেটা দিয়ে সম্মানের সঙ্গে বাকি জীবন পার করতে পারেন।’

জায়েদ খান আরো বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি পিরোজপুরের সাপোর্টের সহকর্মীদের। পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান ও স্থানীয় থানার ওসিসহ যাঁরা আমাদের উৎসাহ দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাদের। আমি আজীবন চেষ্টা করে যাব মানুষের কল্যাণে কাজ করতে।’