নতুন সিনেমায় ভিলেন মোশাররফ করিম, সঙ্গী তারিক আনাম
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ‘গাঙকুমারী’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা তারিক আনাম খান, মোশাররফ করিম ও রোবেনা রেজা জুঁই। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জের হাসাউড়া এলাকায় সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়েছে।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরে অনুদান পাওয়া সিনেমাটি পরিচালনা করছেন ফজলুল কবীর তুহিন। আজ শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিনেমাটির পরিচালক।
ফজলুল কবীর তুহিন বলেন, ‘১৫ তারিখ আমরা শুটিং শুরু করেছি। সুনামগঞ্জে শুটিং চলবে আরো দুই দিন। এখনো তারিক আনাম খান ও মোশাররফ করিম শুটিংয়ে অংশ নেননি। তাঁরা ১৫ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার শুটিংয়ে অংশ নেবেন।’
জানা গেছে, ভাটি অঞ্চলের জেলেজীবন নিয়ে নির্মিতব্য এই সিনেমাটিতে খল চরিত্রে অভিনয় করছেন মোশাররফ করিম। কেন্দ্রীয় ‘গাঙকুমারী’র চরিত্রে অভিনয় করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলার শিক্ষার্থী নবাগত তুরা। তাঁর স্বামীর চরিত্রে দেখা যাবে তারিক আনাম খানকে। গুরুত্বপূর্ণ আরেক চরিত্রে কাজ করছেন রোবেনা রেজা জুঁই। এ ছাড়া জনপ্রিয় আরো অনেক অভিনেতাকে দেখা যাবে এই সিনেমায়। তবে এখনই তাঁদের নাম প্রকাশ করতে চান না পরিচালক। সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করছেন মকসুদ জামিল মিন্টু।
সিনেমাটির গল্পে দেখা যাবে, বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের ১৮-১৯ বছরের এক জেলেকন্যা গাঙকুমারী। ভাটি অঞ্চলের নদী, পানি, গাছ, পাখি ও আকাশের সঙ্গে প্রকৃতির অংশ হিসেবেই বিরাজ করে, গাঢ় শ্যামলা এই মেয়েটি। বর্ষার নতুন জলের গন্ধ তার নদীর মতো গভীর কালো চোখকে মাতাল করে। জমাটবাঁধা মেঘের মতো কালোচুলের ঢল, বাংলার পোড়ামাটির টেপা পুতুলের মতো তার সুঠাম দেহের পিঠ ছাপিয়ে গেছে। নদীর বুকে নৌকা বেয়ে এবং বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে মাছ ধরে গাঙকুমারীর দিন কাটে। সারল্য ও বলিষ্ঠতার সুস্পষ্ট ছাপ তার আচরণ ও দেহভঙ্গিমায়, যা সে চেষ্টাহীনভাবেই প্রকৃতির কাছ থেকে পেয়েছে। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া পেশাগত জীবনের কারণে, নারী হিসেবে পিতৃতান্ত্রিক সমাজের কোনো দ্বিধা, ভয় বা আড়ষ্টতা ভর করেনি তার মনে। মানুষ হিসেবে আত্মরক্ষার সার্বক্ষণিক যে সংগ্রাম চলে সামাজের প্রান্তিক মানুষদের মধ্যে, তা গাঙকুমারী চরিত্রে সৌন্দর্য রূপে প্রতীয়মান হয়ে পৌঁছে গেছে পৃথিবীর সব প্রান্তিক মানুষের অনির্দেশ্য কোনো জীবন সংগ্রামে। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সহজশক্তি গাঙকুমারী চরিত্রের আরেকটি বৈশিষ্ট্য এবং এই কারণেই আবহমান বাংলার নারীর আকাঙ্ক্ষা ও সংগ্রামের প্রতিনিধিত্বও করে সে। শাপলা ফোটা নদীর বুকে বেড়ে ওঠা, অত্যন্ত স্বল্পভাষী এই মেয়েটির জীবন নানা বাঁকে বিচিত্র ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে বয়ে চলে এবং এর ভেতর দিয়ে উঠে আসে বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির জলছবি।