নায়ক জসিম নেই ২২ বছর

Looks like you've blocked notifications!
আশি দশকের দাপুটে চিত্রনায়ক জসিম। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকাই সিনেমার আশি দশকের দাপুটে চিত্রনায়ক জসিম নেই ২২ বছর। ১৯৯৮ সালের আজকের দিনে (৮ অক্টোবর) মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন সে সময়ের এই অ্যাকশন হিরো।

দিনটি স্মরণ করে বিএফডিসিতে আজ বাদ আসর মিলাদ মাহফিল ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আজ বাদ আসর শিল্পী সমিতির স্টাডি রুমে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করেছি। সকাল থেকে শিল্পী সমিতিতে কোরআন খতম চলছে। দেশের সবার কাছে দোয়া চাই। জসিম ভাই যেখানে আছেন, তিনি যেন ভালো থাকেন। আমরা সব সময় চেষ্টা করি গুণী শিল্পীদের বিশেষ দিনে স্মরণ করতে।’

বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক জসিম ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। খল চরিত্র দিয়ে অভিনয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরে নায়ক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁকে ধরা হয় বাংলাদেশের অ্যাকশন ধারার চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রবর্তক।

নায়ক জসিমের পুরো নাম আবদুল খায়ের জসিম উদ্দিন। তিনি ১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার কেরানীগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। লেখাপড়া করেন বিএ পর্যন্ত। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে লড়াই করেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে ‘দেবর’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে জসিমের আত্মপ্রকাশ। এ ছবিতে তাঁর অভিনয় পরিচালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অল্প দিনের মধ্যেই চলচ্চিত্রে ব্যস্ত হয়ে পড়েন জসিম। ১৯৭৩ সালে তিনি ‘রংবাজ’ ছবিতে অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করে প্রশংসিত হন।

দুই বন্ধু আরমান ও মাহবুবকে নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন ‘জেমস ফাইটিং গ্রুপ’। চলচ্চিত্রের অ্যাকশন দৃশ্য পরিচালনা এবং স্ট্যান্টম্যান সরবরাহের কাজ করত গ্রুপটি।

নায়ক জসিম খলচরিত্রে অভিনয় করেন দেওয়ান নজরুলের ‘বারুদ’, ‘আসামি হাজির’, ‘ওস্তাদ সাগরেদ’, ‘জনি’, ‘কুরবানি’সহ অনেক ব্যবসাসফল ছবিতে। বলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘শোলে’র আদলে ঢাকায় নির্মিত হয় ‘দোস্ত দুশমন’ ছবিটি। মূল ‘শোলে’ ছবিতে খলনায়ক ‘গাব্বার সিং’-এর ভূমিকায় অভিনয় করে অমর হয়ে আছেন আমজাদ খান। ‘দোস্ত দুশমন’ ছবিতে খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন জসিম।

১৯৮০ সালের শুরুর দিকে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সবুজ সাথী’ ছবির মাধ্যমে তিনি নায়ক হয়ে পর্দায় হাজির হন। ভিলেন থেকে নায়ক চরিত্রে এসেও ব্যাপক সাফল্য পান জসিম। তিনি ববিতা, সুচরিতা, শাবানা, রোজিনা, নাসরিনসহ সে সময়ের সফল নায়িকাদের বিপরীতে অভিনয় করেন।

জসিম অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘রাজ দুলারী’, ‘তুফান’, ‘জবাব’, ‘নাগ নাগিনী’, ‘বদলা’, ‘বারুদ’ প্রভৃতি। জসিমের প্রথম স্ত্রী ছিলেন চিত্রনায়িকা সুচরিতা। পরে তিনি ঢাকার প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে চিত্রনায়িকা নাসরিনকে বিয়ে করেন। নায়কের জসিমের নামে বিএফডিসিতে রয়েছে ‘মুক্তিযোদ্ধা চিত্রনায়ক জসিম ফ্লোর’।