নেটফ্লিক্সের ‘এক্সট্রাকশন’ ঘিরে চলছে আলোচনা-সমালোচনা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/04/25/enter.jpg)
অবসর সময়ে ছবি দেখতে পছন্দ করেন অনেকেই। প্রযুক্তির উৎকর্ষে ঘরে বসে বিশ্বখ্যাত সব ছবি এখন হাতের মুঠোয়। আর করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে ছবিপ্রেমীরা ঢুঁ মারছেন এক ওয়েবসাইট থেকে অন্য ওয়েবসাইটে। নেটফ্লিক্সের ‘এক্সট্রাকশন’ এরই মধ্যে তুলেছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের রুশো ভ্রাতৃদ্বয়কে কে না চেনেন। তাঁদের সঙ্গে এবার কাজ করেছেন ‘এক্সট্রাকশন’ পরিচালক স্যাম হারগ্রেভ। শোনা যায়, ছবিটির নাম প্রথমে ‘ঢাকা’ রাখা হলেও পরে পরিবর্তন করা হয়। ‘ক্যাপ্টেন অ্যামেরিকা : সিভিল ওয়ার’ এবং ‘অ্যাভেঞ্জার্স : এন্ডগেম’-এর মতো ছবিতে হারগ্রেভ স্টান্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১৭ সালে ‘অ্যাটমিক ব্লোন্ড’ ছবিতে তিনি অভিনয়ও করেছেন। দ্য সাউথ আফ্রিকান ডটকমের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি স্ট্যান্টম্যান থেকে পরিচালক বনে যাওয়া স্যাম হারগ্রেভ ফাস্ট কোম্পানিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি অ্যাকশন দৃশ্যকে ওষুধের মতো গ্রহণ করেন। বলেন, ‘আমি সত্যিকার অর্থেই সাদা জ্যাকি চ্যান হতে চাই। সত্যি বলছি। তিনি স্ট্যান্টম্যান হিসেবে শুরু করেন এবং এরপর তিনি লিখেছেন, পরিচালনা করেছেন, অভিনয় করেছেন। তিনি আসলে সবকিছুই করেছেন।’
হারগ্রেভ আরো বলেন, আপনি লাথি-ঘুষি অনেক উপায়েই মারতে পারেন। একটি মাস্টারপিস কিংবা ভিন্ন কিছু তৈরি করতে, এটি আসলে নির্ভর করে দৃশ্যগুলো কীভাবে ধারণ করা হয়েছে। স্যামের মতে, ক্যামেরা আরেকটি চরিত্র। শুধু মারামারির দৃশ্য নয়, চরিত্রগুলো কীভাবে সময় ব্যয় করছে ও গল্পের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে, তা-ও দেখায় ক্যামেরা।
‘এক্সট্রাকশন’ সম্পর্কে
ছবিতে অভিনয় করেছেন বিশ্বখ্যাত অভিনেতা ক্রিস হেমসওর্থ, যিনি টাইলার রেকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এতে তাঁকে দেখা গেছে কালোবাজারের একজন সদস্য হিসেবে। যে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন কাজ করে থাকে। সে বাংলাদেশে আসে ভারতের এক গ্যাংস্টারের ছেলেকে উদ্ধার করার জন্য, যাকে বাংলাদেশের গ্যাংস্টার অপহরণ করে। এই উদ্ধার মিশনে এসে, টাইলারের নিজ পরিবারের কথা মনে করিয়ে দেয় সেই বাচ্চা ছেলেটি।
এখন টাইলার কি পারবে সেই ছেলেটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে নিয়ে সেই ছেলে ও নিজেকে সুস্থ-সুন্দর জীবন দিতে? নাকি তারা দুজনেই এই অপরাধজগতের সঙ্গে আরো জড়িয়ে যাবে? তা জানতে আপনাকে দেখতে হবে, ক্রিস হেমসওর্থ অভিনীত ‘এক্সট্রাকশন’।
চিরচেনা ঢাকার দৃশ্য
প্রোডাকশন ডিজাইনে ‘এক্সট্রাকশন’ টিম যে কোনো কমতি রাখেনি, তার প্রমাণ ট্রেইলারের প্রত্যেকটা শট। রিকশা থেকে শুরু করে গাড়ির নম্বর প্লেট, পুলিশের পোশাক কিংবা বুড়িগঙ্গার উপরের পোস্তগোলা ব্রিজ-১ কিছুই মিস করেনি তারা।
ছবির সংলাপ
ইন্ডিয়া টুডের রিভিউতে বলা হয়েছে, ‘তুমি তো পোলাপান’, ‘ঢাকা বন্ধ করে দাও’ ইত্যাদি বাংলা সংলাপ ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ‘প্রমাণ দাও’ সংলাপটি এরই মধ্যে টুইটারে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করছেন অনেকেই।
দেখুন ট্রেইলার :
অসামঞ্জস্য
সমালোচনাকারীদের কেউ কেউ বলছেন, ছবির প্রোডাকশন ডিজাইনে সর্বোচ্চ শ্রম দেওয়ার ছাপ স্পষ্ট। তবে তাতেও বেশ কিছু অসামঞ্জস্য ফুটে উঠেছে। একেকটা দৃশ্য দেখলে যেন মনে হয় ঢাকার গলিতেই আছে, আবার বিরিয়ানি সেন্টার নামে বিরিয়ানির দোকান বা এলিট বাহিনীর গাড়িতে এলিট লেখা চোখে পড়ে সহজেই। এমনকি বাংলাদেশের বাজারের দৃশ্যে হিন্দিতে লেখা সাইনবোর্ড দেখেও মন খুঁত খুঁত করছে কারো কারো।
ছবির কলাকুশলী
‘এক্সট্রাকশন’ পরিচালনা করেছেন স্যাম হারগ্রেভ। এতে অভিনয় করেছেন টেইলর রাকের ভূমিকায় ক্রিস হেমসরোর্থ, রুদ্রাক্ষ জয়সালের ভূমিকায় অভি, ডেভিড হার্বার, পঙ্কজ ত্রিপাঠি, রণদীপ হুদা, মার্ক ডোনাটো, ফে মাস্টারসন, ডেরেক লুক প্রমুখ। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন মার্ভেলের ‘অ্যাভেঞ্জার্স : ইনফিনিটি ওয়ার’ ও ‘এন্ডগেম’ সিনেমার পরিচালক জো ও অ্যান্থনি রুশো।
পত্রপত্রিকার খবর, ঢাকার প্রেক্ষাপটে নির্মিত হলেও মূল দৃশ্যায়ন হয়েছে ভারতের আহমেদাবাদের একাধিক লোকেশনে। সেখানে বাংলাদেশের মতো করেই সেট তৈরি করা হয়। পরে ঢাকায় সামান্য কিছু শুট করা হয়। বিশেষ করে বুড়িগঙ্গা নদী ও সেতুর দৃশ্য নিয়ে ঢাকার দর্শক ট্রেইলার মুক্তির পর থেকে আলোচনা করছেন।
২০১৮ সালের নভেম্বরে কাজ শুরু হয় ছবিটির। এরপর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রডাকশনের কার্যক্রম শেষ হয়। গতকাল শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায় ব্যয়বহুল ও আলোচিত ছবিটি।