শেষবারের মতো এফডিসিতে যাওয়া হচ্ছে না
যে এফডিসিতে জীবনের দীর্ঘ সময় লাইট, ক্যামেরা আর অ্যাকশনের মধ্যে কাটিয়েছেন সাদেক বাচ্চু, সে এফডিসিতে শেষবারের মতো যাওয়া হচ্ছে না তাঁর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অবস্থায় ‘মাল্টিঅরগান ফেইলিয়রে’ মৃত্যুবরণ করায় তাঁর মরদেহ এফডিসিতে নেওয়া হচ্ছে না।
আজ সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম শেষবারের মতো তাঁকে তাঁর প্রিয় স্থান এফডিসিতে নিতে। কিন্তু তাঁর পরিবার চাচ্ছে না এ অবস্থায় (করোনাভাইরাসে আক্রান্ত) তাঁকে এফডিসিতে নিতে। সাদেক বাচ্চুর ভাই একজন ডাক্তার, তিনি কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না। কিন্তু আমরা আমাদের পক্ষে তাঁকে এফডিসিতে নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম।’
জায়েদ খান আরো বলেন, ‘সাদেক বাচ্চু শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবক। তিনি সব সময় আমাদের পরামর্শ দিতেন। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমরা তাঁর পাশে ছিলাম। তিনি এত দ্রুত চলে যাবেন, বুঝতে পারিনি। সবাই দোয়া করবেন, তাঁর আত্মা যেন শান্তি পায়।’
জানা গেছে, প্রয়াত সাদেক বাচ্চুকে বাদ আসর জানাজা শেষে খিলগাঁও কবরস্থানে দাফন করা হবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকায় এই অভিনেতার দাফনের দায়িত্ব নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পাঁচ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করা সাদেক বাচ্চু ঠাণ্ডা-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর তাঁর করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। একদিন পর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি কোভিড ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন।
সাদেক বাচ্চু বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম খল-অভিনেতা। মঞ্চ ও টিভি নাটক থেকে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ১৯৭৭-৭৮ সালে বিটিভির নিয়মিত শিল্পী হিসেবে অভিনয় শুরু করেন সাদেক বাচ্চু। বিটিভিতে তাঁর অভিনীত প্রথম নাটক ‘প্রথম অঙ্গীকার’।
অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। নায়ক আলমগীর পরিচালিত ‘একটি সিনেমার গল্প’ চলচ্চিত্রের জন্য এই পুরস্কার অর্জন করেন সাদেক বাচ্চু।
১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রামের সুমতি’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন সাদেক বাচ্চু। তিনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।