সারা জীবন মাকে বিরক্ত করতে চাই : মাহি
কবি বলেছেন, ‘মা কথাটি ছোট্ট অতি, কিন্তু জেনো ভাই, ইহার চেয়ে নামটি মধুর, তিন ভুবনে নাই।’ মায়ের হৃদয়ের বিশালত্ব নিয়ে বহু গাথা রচিত হয়েছে। কিন্তু সবটুকু কি প্রকাশ সম্ভব? সম্ভব না। কারণ মায়ের তুলনা মা-ই। আজ রোববার (১০ মে) বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে মা দিবস। সবাই মাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। তবে মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ যেন প্রতিটি মুহূর্তের হয়, সে কথাই বারবার বলেছেন মনীষীরা।
ঢালিউড নায়িকাদের মধ্যে বর্তমান সময়ে অন্যতম জনপ্রিয় মাহিয়া মাহি। নায়িকাদের জীবনে মায়ের ভূমিকা অনেক। মাহির বেলায়ও কম নয়, তবে মা মাহিকে অনেক ‘যন্ত্রণা’ দেন। অবশ্য মাহিও সারা জীবন মায়ের যন্ত্রণা সহ্য করতে চান।
মা দিবসে এনটিভি অনলাইনকে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন মাহিয়া মাহি। জানিয়েছেন নানা অজানা।
পড়ুন মাহিয়া মাহির ভাষ্যে
মা তো প্রায় সব সময়ই বিরক্ত করে, যখন ঘুমাতে যাই, যখন আমি টিভি দেখি বা যখন ফোনে জরুরি কোনো কথা বলছি... ধরেন, আমি কারো সঙ্গে জরুরি কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলছি। তখন মা আমার কাছে এসে জানতে চাইল, কী দিয়ে খাব। আমি ইশারা দিয়ে বোঝাতে চাইলাম, আমি জরুরি কথা বলছি, পরে। মা তখন বলল, থাক ঝাল বেশি দেব না কম। কী দিয়ে খাব, ঝাল কম না বেশি, কী খেতে ইচ্ছে করছে, এসব প্রশ্ন জরুরি কাজের সময় আমার খুব বিরক্ত লাগে। তখন আমি মায়ের প্রতি অনেক বিরক্ত হই, আবার কোনো প্রশ্ন একবারের বেশি করলে বিরক্ত লাগে। মা তো এক প্রশ্ন বারবার করে।
যখন আমি কোথাও শুটিংয়ে, আর মা সেই শুটিংয়ে যায় না, তখন অনেক ভালো লাগে। কারণ সব সময় মা আমার মনে ভেতর থাকে, আর মনে হতে থাকে এই এখন মা থাকলে আমাকে এটা বলত, মা থাকলে এটা করতে দিত না। মায়ের প্রতি বিরক্ত যে বিষয়গুলো, সেগুলো আমার কাছে সুখ হয়ে বুকের ভেতরে গাঁথে। মায়ের বিরক্তিকর আচরণগুলো আমাকে অদ্ভুত আনন্দ দেয়। খুব মিস করি মাকে।
চলচ্চিত্রে কাজ করাতে মায়ের ভূমিকা অনেক। মা সব সময় বোঝাতে চেষ্টা করত, আমি কী হতে চাই। যখন বুঝল আমি অভিনয় করতে চাই, তখন থেকে আমাকে সাপোর্ট করেছে। পাশে থেকেছে। আমার কোনো ছবি দর্শকপ্রিয়তা পেলে অনেক বেশি আনন্দিত হয়েছে। আবার কোনোটা খারাপ হলে কষ্ট পেয়েছে। কেন খারাপ গেল, সেটা খুঁজে বের করে আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করে।
সেই ছোটবেলা থেকে মাকে বিরক্ত করছি। আমি ছোটবেলা থেকেই জানতে চাইতাম। দেখা গেল একটা জিনিস দেখেছি, তখন মা এটা কী, ওটা কী... একটি জিনিস বারবার জানতে চাইতাম। তবে মাকে কখনো বিরক্ত হতে দেখিনি। এখনো না, কারণ আমি এখনো সমানতালে মাকে বিরক্ত করে চলেছি। সারা জীবন মাকে বিরক্ত করতে চাই।
মা দিবসে আমার প্রত্যাশা, জগতের সকল মা সুখে থাকুন। আর মৃত্যুর পর নয়, জীবদ্দশায় মায়েরা যেন ভালো থাকেন, সেই প্রত্যাশা করি। অনেকেই বলেন, মৃত্যর পর বুঝেছি মা কী ছিলেন। আমি বলি, মৃত্যুর পর বোঝার প্রয়োজন নেই। জীবিত অবস্থায় মাকে ভালোবাসুন। আমি প্রতিদিন নামাজ শেষে মোনাজাতে আল্লাহর কাছে ধৈর্য কামনা করি। মা ছোটবেলায় আমাকে যে ধৈর্য নিয়ে ভালোবেসেছে, আমিও যেন তাঁর মতো হতে পারি।