সিলেটে দুইদিনব্যাপী নান্দীমুখ রঙ্গমেলা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও নবনাট্যচর্চার ৫০ বছর একই সূত্রে গাঁথা। নান্দীমুখ এই দুটো বিষয়কে স্মরণীয় করে রাখতে জুন মাসে দেশের তিনটি জেলায় ‘নান্দীমুখ রঙ্গমেলা ২০২২’ আয়োজন করেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল শুক্রবার ও পরশু শনিবার (১৭ ও ১৮ জুন) সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়াম ‘মানবতার পাশে, সম্প্রীতির পাশে নাটক’ স্লোগান নিয়ে দুইদিনব্যাপী রঙ্গমেলার আয়োজন করেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নান্দীমুখ রঙ্গমেলা প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করবেন ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাইকমিশনার নিরাজ কুমার জয়সাল। অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অনিরুদ্ধ কুমার ধর, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ এর সভাপতি মিশফাক আহমেদ চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল আলম সেলিম। সভাপতিত্ব করবেন নান্দীমুখ এর দলীয় প্রধান অভিজিৎ সেনগুপ্ত। সঞ্চালনা করবেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত।
রঙ্গমেলায় নান্দীমুখ তাদের প্রশংসিত দুটি নাটক মঞ্চস্থ করবে। উদ্বোধনী দিনে শুক্রবার মঞ্চায়িত ‘তবুও মানুষ’ নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন অভিজিৎ সেনগুপ্ত। নাটকের কাহিনি নির্মিত হয়েছে মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে। মানুষের ইতিহাস নিরন্তর সংগ্রামের ইতিহাস। কখনো প্রকৃতির সাথে, কখনো নিজের সাথে, কখনো একদল শোষকের বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করতে করতেই মানুষের যাত্রা সেই অতীত থেকে আগামী ভবিষ্যতের দিকে। ব্যক্তিস্বার্থে মানুষ মানুষকে ভাগ করেছে জাত, ধর্মের খড়গ দিয়ে। মানুষের নিরন্তর সংগ্রামের ইতিহাস বিচারে দেখা যায় শোষণের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করেছে তাঁরাই জন্ম দিয়েছে নতুন নতুন নীতি-নৈতিকতা আর আদর্শের। এ নাটকে বিজয়দেব তেমনই একটি চরিত্র। বিজয়দেবদের আত্মদানের ভিত্তিতেই চন্দ্রকেতুরা পরিবর্তন করেছে নিজেকে ও সমাজকে। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিজিত সেনগুপ্ত, সুজিত দাশ, শাহীনুর সরোয়ার, বিকিরণ বড়ুয়া, সজীবুর রহমান, স্নিগ্ধা রজব বৃষ্টি, অন্বেষা মজুমদার, বৃষ্টি বড়ুয়া, সাইদুল আলম, আশীষ নন্দী প্রমুখ।
শনিবার (১৮ জুন) মঞ্চায়িত হবে ‘আমার আমি’। এই নাটকের কাহিনি আধুনিক বাংলা রঙ্গালয়ের মহান অভিনয়শিল্পী শ্রীমতী বিনোদিনী দাসীর আত্মজীবনী অবলম্বনে। এই নারী অভিনয়শিল্পীর জীবনের গতি প্রকৃতিকে নতুনভাবে আবিষ্কারের চেষ্টাই এই নাটকের উদ্দেশ্য। সেইসময়ে একজন নারী হয়ে তার যে আত্মত্যাগ সেটাকে আমরা কতটুকু মূল্যায়ন করেছি। তাঁর যোগ্য সম্মান কী আমরা তাঁকে দিয়েছি? এরকম হাজারো প্রশ্ন উঁকি মারে আজকে আমরা যারা থিয়েটার করছি তাদের মনে। নাকি পুরুষ শাসিত সমাজের নিষ্পেশনে অভিমানী এই শিল্পী রঙ্গালয়কে বিদায় জানিয়েছিলেন অসময়ে।
সেজন্যেই প্রশ্ন থেকে যায়, কেন তিনি অভিনয় ছেড়ে দিলেন? কী এমন ঘটনা ঘটেছিল? শ্রীমতী বিনোদিনী দাসী তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমার খাতা’, ‘আমার কথা’ ও ‘আমার অভিনেত্রী জীবন’-এ তাঁর হৃদয়ে বপন করা যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। সেই যন্ত্রণারই এক প্রামাণ্যনাট্য ‘আমার আমি’। নাটকটিতে একক অভিনয় করেছেন দীপ্তা রক্ষিত।