সৌমিত্রের জন্য ভিড় না করে প্রার্থনার অনুরোধ কন্যার

Looks like you've blocked notifications!
কন্যার সঙ্গে কলকাতার বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ছবি : সংগৃহীত

কলকাতার বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (৮৫) মারা গেছেন। আজ দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। কলকাতার একাধিক গণমাধ্যম তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল সূত্রে।

এদিকে, এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সৌমিত্রকন্যা পৌলমী বোস এ তথ্য নিশ্চিত করে লিখেছেন, ‘আমার বাপি আজ সকালে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। পরিবার হিসেবে আমরা বিধ্বস্ত। দয়া করে তাঁর আত্মার জন্য প্রার্থনা করুন। আমি বিনীত ও আন্তরিকভাবে সবাইকে অনুরোধ করছি, দয়া করে এখনই আমাদের এখানে আসবেন না। আমার মা এবং আমার ছেলেদের স্বাস্থ্যও নাজুক। দয়া করে তাঁদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না।’

গত ৬ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এরপর চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, এই অভিনেতা করোনার সঙ্গে একাধিক রোগে ভুগছিলেন। জানা গিয়েছিল, করোনার পাশাপাশি সৌমিত্রের প্রস্টেট ক্যানসার নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছিল ফুসফুস ও মস্তিষ্কে। মূত্রথলিতেও সংক্রমণ হয়। তবে দ্বিতীয়বার প্লাজমা থেরাপির পর খানিক শারীরিক উন্নতি লক্ষ করা গিয়েছিল।

১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ১৯৫৯ সালে অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়জগতে পা রাখেন। এরপর তিনি সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার ১৪টিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘ফেলুদা’। তিনি সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘সোনার কেল্লা’ এবং ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ সিনেমায় ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। পরে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো জনপ্রিয় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন।

শুধু সিনেমা নয়, অসংখ্য নাটক, যাত্রা এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও তাঁর নাম অত্যন্ত সম্ভ্রমের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। তিনি কবি ও অনুবাদকও।

ভারত সরকার কর্তৃক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ২০০৪ সালে ‘পদ্মভূষণ’ ও ২০১২ সালে ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’ লাভ করেন। এ ছাড়া ২০১৭ সালে তিনি ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ‘লিজিওন অব অনার’ লাভ করেন। একই বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কার অর্জন করেন। যদিও ২০১৩ সালে এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বর্ষীয়ান এ অভিনেতা।