স্টেজে গাওয়া মিতা হকের প্রথম গান ‘নাচে ইরানি মেয়ে’
একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক জীবনে প্রথম স্টেজে গেয়েছিলেন নজরুলসংগীত। গানটির নাম ‘নাচে ইরানি মেয়ে’। এনটিভির ‘বন্ধু তোমারই খোঁজে’ আয়োজনে অতিথি হয়ে এমন তথ্য জানিয়েছিলেন এই সংগীতশিল্পী।
২০১৬ সালের সেই আয়োজনে মিতা হক বলেছিলেন, “আমার বয়স যখন ছয় বছর, তখন আমি প্রথম স্টেজে গান গেয়েছিলাম। আমাদের পাড়ায় একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল, একটা উঁচু টেবিল দিয়ে তার ওপর আমাকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে আমি গান গেয়েছিলাম ‘নাচে ইরানি মেয়ে’ নজরুলের গান।”
নিজের ছোটবেলার স্মৃতি শেয়ার করে মিতা হক জানিয়েছিলেন, ‘আমার বয়স যখন দুই না তিন, লালমাটিয়ায় আড়ংয়ের পেছনে একটি কলোনি আছে, এখনও আছে। প্রথমে অল্প কয়েকটা বিল্ডিং ছিল, ডুপ্লেক্স ছিল প্রথম বিল্ডিংটা, ওখানে আমরা থাকতাম। ছোটবেলা থেকে আমার একটা মজা ছিল, আমার চেয়ে বড়দের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হতো। কারণটা হচ্ছে গান। বড়রা আমার কাছে গান শুনতে চাইত আর ছোটরা তো খেলতে চাইত।’
রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক আজ সকাল ৬টা ২০ মিনিটে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বেলা ১১টায় শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ ছায়ানটে নেওয়া হয়। তাঁকে দাফন করা হবে কেরানীগঞ্জের বড় মনোহারিয়ায়।
মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায়। তিনি প্রয়াত অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। তাঁর চাচা দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক ও রবীন্দ্রগবেষক ওয়াহিদুল হক। মেয়ে জয়িতাও রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী।
বাংলাদেশ বেতারের সর্বোচ্চ গ্রেডের তালিকাভুক্ত শিল্পী মিতা হক। ১৯৯০ সালে বিউটি কর্নার থেকে প্রকাশিত হয় মিতা হকের প্রথম রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম ‘আমার মন মানে না’। সংগীতায়োজনে ছিলেন সুজেয় শ্যাম। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তাঁর এককভাবে মুক্তি পাওয়া মোট ২৪টি অ্যালবাম আছে। এর মধ্যে ১৪টি ভারত থেকে ও ১০টি বাংলাদেশ থেকে। তিনি ২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০২০ সালে একুশে পদক প্রদান করে। ‘সুরতীর্থ’ নামে একটি গানের স্কুলও রয়েছে তাঁর।