১৪ বছর পর চলচ্চিত্রে রোজিনা
আবারও ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছেন আশি দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা রোজিনা। চলতি অর্থবছরে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘ফিরে দেখা’য় ‘বীরাঙ্গনা’ চরিত্রে অভিনয় করবেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্রটির কাহিনি, রচনা ও পরিচালনা করছেন তিনি। রোজিনা সর্বশেষ ২০০৬ সালে ‘রাক্ষুসী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। দীর্ঘ ১৪ বছর পর আবারও অভিনয়ে ফিরছেন তিনি।
কোনো রাগ বা অভিমান নয়, নিজের মনের মতো চরিত্র না পেয়ে চলচ্চিত্র থেকে এত দিন দূরে ছিলেন রোজিনা। এনটিভি অনলাইনকে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘অভিনয় হচ্ছে আমাদের শিল্পীদের নেশা। সব সময় কাজ করতে চাই। তবে কাজ করার মতো চরিত্রও তো চাই। বিগত দিনে আমাকে অনেকেই অভিনয় করার জন্য অফার (প্রস্তাব) করেছেন, তবে চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় কাজ করা হয়নি।’
ছবিতে নিজের চরিত্র প্রসঙ্গে রোজিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা দেশে তাণ্ডব চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। আমার নানাবাড়ি গোয়ালন্দ আর দাদাবাড়ি রাজবাড়ী, সারা দেশের মতো সেখানেও রয়েছে অসংখ্য তাণ্ডবের কাহিনি। এ দুই জায়গার মাঝে একটি বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধের একটি ঘটনা ঘটে, যা আমার এই চলচ্চিত্রে উঠে আসবে। এই চলচ্চিত্রে আমি পরিচালনার পাশাপাশি বীরাঙ্গনা চরিত্রে অভিনয় করব।’
আগামী সপ্তাহের মধ্যে ছবির অন্য পাত্র-পাত্রীর নাম ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন রোজিনা। ছবির প্রেক্ষাপট গ্রাম, তাই এই বৃষ্টিতে শুটিং করা সম্ভব নয়, বৃষ্টি কমে গেলে দ্রুত ছবির শুট শুরু করবেন বলেও জানান তিনি।
রোজিনা চলচ্চিত্রে আসার আগে মঞ্চ নাটক করতেন। তখন তিনি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনেও কাজ করেন। ১৯৭৬ সালে ‘জানোয়ার’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন। এফ কবীর পরিচালিত ‘রাজমহল’ সিনেমায় একক নায়িকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর আর পিছু ফিরতে হয়নি তাঁকে। আশি দশকে প্রথম সারির নায়িকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
শুধু দেশে নয়, খ্যাতনামা এই অভিনেত্রী পশ্চিমবাংলার তাপস পাল, মিঠুন চক্রবর্তী, পাকিস্তানের জনপ্রিয় নায়ক নাদিমসহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত বহু অভিনেতার বিপরীতে অভিনয় করেছেন।
১৯৮০ সালে ‘কসাই’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন রোজিনা। ১৯৮৮ সালে ‘জীবনধারা’ ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তিনি বাচসাস পুরস্কারও পেয়েছেন।
‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘সাহেব’, ‘তাসের ঘর’, ‘হাসু আমার হাসু’, ‘হিসাব চাই’, ‘বন্ধু আমার’, ‘কসাই’, ‘জীবনধারা’সহ তাঁর অভিনীত অধিকাংশ সিনেমাই ব্যবসাসফল হয়।