জুহি চাওলার একাল-সেকাল

Looks like you've blocked notifications!

‘আমি কাজের গুরুত্ব বুঝে সিদ্ধান্ত নিই। যখন একটা কাজ হয়ে যায়, তখন বাকি কাজগুলোয় মন দিতে চেষ্টা করি। আমি গুরুত্ব অনুসারে কাজ ভাগ করি। আমার পরিবার, আমার কাজ— সবকিছুর ঊর্ধ্বে। এরপর থাকে আমার কিছু সামাজিক কাজ ও বন্ধুবান্ধব। তবে সবকিছু সামলাতে আমার অসুবিধা হয় না।’ সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের কাছে এভাবেই নিজের জীবনের কথা বললেন বলিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা জুহি চাওলা।

ইদানীং অভিনয়কে পাশে রেখে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজে নেমেছেন জুহি। সেই প্রসঙ্গে বললেন, ‘আজ থেকে প্রায় পাঁচ মাস আগে একদিন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছিলাম। তখনই পরিবেশ দূষণের ওঠে। কথায় কথায় আমার দেবর আমাকে প্লাস্টিকের ভয়ংকর দূষণের কথা বলে। আমি সবটা শুনে একেবারে চমকে গিয়েছিলাম।’

এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জুহি বলেন, ‘প্লাস্টিকের মধ্যে বেশ কিছু রাসায়নিক পদার্থ থাকে। আমরা সকাল থেকে টুথব্রাশ, কলম ইত্যাদি জিনিস ব্যবহার করি। যেগুলো কেউ কেউ মুখে দেয়, হাতে নেয়, শিশুরা ব্যবহার করে। খাবার পানিও বিক্রি হয় প্লাস্টিকের বোতলে। প্লাস্টিকের কণায় বিষাক্ত কিছু না কিছু থাকে। ক্ষতিকর টক্সিনের কারণে পেটের অসুখ হয়। হরমোনজনিত নানা সমস্যা দেখা দেয়। অথচ সব জেনে আমরা অন্ধ হয়ে বসে আছি। দূষণ আমাদের পৃথিবীকে আরো ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই ঠিক করেছি, যখনই পারব, আমি আমার মতো করে প্লাস্টিকের এই ভয়ংকর দূষণের বিরুদ্ধে মানুষকে সাবধান করব।’ শুধু একজন নামি অভিনেত্রী হিসেবে নন, পরিবেশ এবং মানব কল্যাণের কাজ করেও নিজের দায়িত্বশীলতা প্রতিষ্ঠিত করতে চান জুহি চাওলা।

কথায় কথায় নিজের সংসার জীবন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বললেন, ‘আমার মেয়ে এখন অনেক ছোট। এখন থেকেই তার মনে নানা ভাবনা খেলা করে। বই পড়তে ভীষণ ভালোবাসে আমার মেয়ে। একদিন তো ঘোষণা করেই দিল, সে বড় হয়ে লেখিকা হবে। আবার এক সময় ওর মনে হয়েছে সে মডেল হবে। আবার হয়তো কবে বলে বসবে আমি অভিনেত্রী হব। পরে হয়তো সবকিছু ছেড়েছুড়ে দিয়ে খেলা নিয়েই মেতে উঠবে। আসলে মা হিসেবে আমি সত্যিই জানি না, আমার মেয়ে শেষ পর্যন্ত কোন দিকে যাবে। তবে একটা জিনিস আমি বুঝেছি। সন্তান মন থেকে যেটা করতে চায়, অভিভাবক হিসেবে সেটাতে উৎসাহ দেওয়া উচিত।’

জুহির অভিনয় জীবনে কোন ছবির চরিত্রে অভিনয় করে তিনি সব থেকে বেশি আনন্দ পেয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বললেন, “অনেক ছবিতেই বেশ কয়েকটি ভালো চরিত্রে অভিনয় করার সৌভাগ্য হয়েছে। রোমান্টিক, ফানি, সুইট, ইমোশনাল হরেকরকম চরিত্র। তবে আমি বলব ‘গুলাব গ্যাং’-এর কথা। একদম ডার্ক একটা চরিত্র। অভিনয় করে খুব আনন্দ পেয়েছি।”

জুহি যোগ করলেন ক্যারিয়ারের এক কঠিন অভিজ্ঞতার কথা, “ফিল্মি ক্যারিয়ারের শুটিংয়ে সবথেকে বেগ পেতে হয়েছে ‘অর্জুন পণ্ডিত’ ছবিতে। ওই ছবিতে সানি দেওলের সঙ্গে চলন্ত ট্রেনের নীচে শুট করাটাই আমার সবথেকে কঠিন ছবি।”

ঘুরতে ভীষণ ভালোবাসেন জুহি। এ বিষয়ে বললেন,  ‘পেরু, চিলি, আর্জেন্টিনা, স্পেন, আমেরিকা, কানাডা, উগান্ডা, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে গিয়েছি। আমি খুব ঘুরে বেড়াই। পাহাড়, সমুদ্র, বরফ সব দেখেছি। তবে লন্ডন হচ্ছে আমার প্রিয় বেড়ানোর জায়গা। আমি প্রায়ই যাই ওখানে। ওখানে আমার একটা বাড়ি আছে।’

বয়স বাড়লেও শরীর-স্বাস্থ্য সম্পর্কে এখনও যথেষ্ট সচেতন জুহি। নিয়মিত যোগব্যায়াম করেন তিনি। এ বিষয়ে বললেন, ‘যোগ ব্যায়াম আমাকে মানুষ হিসাবে অনেক শান্ত করেছে। যোগব্যায়াম করলে একটা মানসিক প্রশান্তি আসে। অনেক সজীব লাগে। ভেতর থেকে একটা শক্তি পাওয়া যায়। আত্মবিশ্বাস আসে। আর তাছাড়া শরীরের ফ্লেক্সিবিলিটি তো আছেই। অনেক পরিস্থিতি এখন সহজে সামলাতে পারি।’