সাক্ষাৎকার

পরমকে মানুষ হিসেবেও আমার খুব পছন্দ : পায়েল

Looks like you've blocked notifications!

টলিউডের ‘প্রেম আমার’খ্যাত অভিনেত্রী পায়েল সরকার। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের একটি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। নাটকের নাম ‘বি-স্বর্গ’। নাটকটি আগামীকাল সোমবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে এনটিভিতে প্রচারিত হবে। কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত নাটকটিতে রওনক হাসানের বিপরীতে দেখা যাবে পায়েলকে। সম্প্রতি নাটকটির শুটিং কলকাতার একটি শুটিং হাউসে করা হয়। সেখানেই শুটিংয়ের ফাঁকে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন পায়েল। তাঁর সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নাইস নূর।

এনটিভি অনলাইন : ‘বি-স্বর্গ’ নাটকে আপনার চরিত্রের নাম নবনীতা। চরিত্রটি সম্পর্কে জানতে চাই। 

পায়েল সরকার : অনেক ইন্টারেস্টিং চরিত্র। একজন আধুনিক নারী নবনীতা। ও যেটা পছন্দ করে কিংবা যেটা করে না, সে ব্যাপারে খুব খোলামেলা ও স্পষ্টবাদী। ওর জীবনে একটা ঘটনা আছে। আমরা দেখি, যারা নিজস্বতা ধরে রাখতে চায়, তাদের প্রেমের সম্পর্কে কিছুটা সমস্যা হয়। আমরা নাটকে দেখব, সাজিদ ও নবনীতা ভালোবেসে বিয়ে করে। তারা একসঙ্গেই থাকে। সম্পর্ক তৈরি করার জন্য তাদের দুজনকেই অনেক আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। সাজিদ তার মাকে ছেড়ে এসে নবনীতার কাছে থাকে। ওরা দুজন দুই রকম মানুষ। তবে তাদের চিন্তায় ফারাক রয়েছে। তাদের থট প্রসেসের কনফ্লিক্ট থেকেই একসময় তারা একসঙ্গে না থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরেই শুরু হবে নাটকের মূল গল্প। 

এনটিভি অনলাইন : নাটকের এই গল্পের মতো বাস্তবে অনেক দম্পতির মধ্যে এ ধরনের সমস্যা আমরা দেখতে পাই। সম্পর্কের এই সমস্যাগুলো কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে? এ বিষয়ে আপনার ব্যক্তিগত অভিমত কী?

পায়েল সরকার : সম্পর্কের সমস্যা কাটিয়ে ওঠা পুরোপুরি নিজস্ব একটা ব্যাপার। প্রত্যেক সম্পর্ক ইউনিক ও আলাদা। যারা সম্পর্কের সমস্যায় পড়েছে, তারাই ভালো বিচার করতে পারবে কীভাকে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসবে। এটা অন্য কেউ সেভাবে অনুধাবন করতে পারবে না। এটা অবশ্য সত্যি কথা, যখন একটা সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর সেই দম্পতি একসঙ্গে থাকতে শুরু করে, তখন কেউ প্রথমে ভাবে না যে ‘আমরা একসঙ্গে থাকতে পারব না’। কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতি যদি আসে, সেটা দুর্ভাগ্যজনক। তখন সঠিক সিদ্ধান্তটাই নেওয়া দরকার। 

এনটিভি অনলাইন : বাংলাদেশের প্রথম কোন নাটকে অভিনয় করলেন। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন হলো? 

পায়েল সরকার : ভীষণ ভালো লেগেছে। আমি শুনেছিলাম, কৃষ্ণেন্দু বাংলাদেশের সেলিব্রেটি পরিচালক। প্রযোজক শায়লা দিদিও কৃষ্ণেন্দুর অনেক প্রশংসা করেছেন। সেটা আমি দেখেছিও। যখন যেটা করতে হবে, সেটা পরিচালক দারুণ বোঝেন। অন্য জায়গায় এসে শুটিং করা ফ্যামিলিয়ার পরিবেশ হওয়ার কথা নয়। সেখানে নিজের জায়গা থেকে বেস্ট কাজ করা এবং অন্যের থেকে সেটা বের করে নেওয়া খুব সহজ কাজও নয়। এই বিষয়গুলো কৃষ্ণেন্দু ভালোভাবে হ্যান্ডেল করেছে।

এনটিভি অনলাইন : বাংলাদেশের টিভি পর্দায় প্রথম আপনাকে দেখাবে। মনে মনে উচ্ছ্বাস অনুভব করছেন কি?

পায়েল সরকার : আমি খুব উচ্ছ্বসিত। সত্যি বলতে, বাংলাদেশে কাজ করার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। সেটা এত দিন হয়নি।

এনটিভি অনলাইন : অপেক্ষাটা নাটকে অভিনয়ের জন্য ছিল নাকি চলচ্চিত্রের জন্য?

পায়েল সরকার : অভিনয়ের জন্য। সেটা নাটক হোক কিংবা চলচ্চিত্র হোক। 

এনটিভি অনলাইন : নাটকটিতে অভিনয়ের প্রস্তাব কীভাবে পেয়েছেন?

পায়েল সরকার : পরম (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) প্রথমে আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল। পরম বলেছিল, এই কাজটা ভালো হবে। পরম বাংলাদেশে অনেক কাজ করেছে।

মাল্টিপ্রেজেন্টেড পারসোনালিটি পরম। আমার সঙ্গে ওর অনেক দিন ধরে পরিচয়। পরমের পরিচালনায় আমি কাজও করেছি। আমার কলেজের সিনিয়র ছিল পরম। পরম খুব ভালো কাজ করে। পরমকে মানুষ হিসেবেও আমার খুব পছন্দ। আমি মনে করি, কাজের জায়গায় মানুষ হিসেবে ভালো হওয়াটা খুব দরকার। আমরা এমন কাজের মধ্যে থাকি, যেখানে পরিবেশ ভালো হওয়া প্রয়োজন। না হলে কাজটা ভালো হয় না। পরম যে কাজটা করে, সেটা কিন্তু ভালো হয়। এ ছাড়া পরম যাদের নিয়ে কাজ করে, সেই কাজটাও ভালো হয়।

এনটিভি অনলাইন : বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের প্রস্তাব পেলে করবেন?

পায়েল সরকার : নিশ্চয়ই করব। কেন করব না? 

এনটিভি অনলাইন : জয়া আহসানের সঙ্গে আপনি নিজেও কাজ করেছেন। বাংলাদেশে অন্য শিল্পীদের অভিনয় আপনার দেখা হয়েছে কি?

পায়েল সরকার : জয়ার অভিনয় অনেক ভালো লাগে আমার। একসঙ্গে কাজ করতে করতে আমাদের বন্ধুত্বও হয়েছে। শাকিবও অনেক ভালো ভালো ফিল্ম করছে। আমি শুনেছি, বাংলাদেশে সে অনেক জনপ্রিয়। আমি শিওর, সে অনেক ভালো অ্যাক্টিং করে। আমার বাংলাদেশের ‘মনপুরা’ ছবিটি ভীষণ ভালো লেগেছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশের ফিল্ম অ্যাকট্রেস পরী মণি, মাহিয়া মাহি, নুসরাত ফারিয়া অনেক ভালো করছে তাঁরা। তাঁদের সবার নাম জানি। কাজ তেমন দেখিনি। 

এনটিভি অনলাইন : শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয়ের প্রস্তাব পেলে করবেন?

পায়েল সরকার : অবশ্যই। আমি সবার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আছি।

এনটিভি অনলাইন : আপনি তো এখন ‘গুড নাইট সিটি’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। কাজ কতদূর এগুলো?

পায়েল সরকার : কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় ছবিটি পরিচালনা করছেন। খুব ভালো হচ্ছে কাজ। এই ছবি নিয়ে এখন আপাতত কিছু বলতে চাই না। এর পরে আর একটা কমার্শিয়াল ছবির শুটিং শুরু করব। এই ছবিতে ফান ও কমেডি আছে। চলতি মাসেই ছবিটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। 

এনটিভি অনলাইন : বাংলাদেশে আসার ইচ্ছে রয়েছে? 

পায়েল সরকার : আমার বাংলাদেশে কখনো যাওয়া হয়নি। তবে আমি ঘুরতে আসতে চাই। বাংলাদেশের মানুষ অনেক সিনেমা পছন্দ করেন। কালচারালি সেখানকার সবাই রিচ। এ রকম একটা জায়গায় আমি যেতেও চাই এবং কাজ করতে চাই।