আমরা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে চাই : মামুনুর রশীদ
‘আমাদেরও একটা দায়বদ্ধতা আছে- যেটার কারণে আজকে আমরা আপনাদের ডেকেছি। আমরা প্রত্যাশা করছি না, আমরা খারাপ কাজ করলে আপনারা ভালো লিখবেন, কিন্তু আমরা ভালো কাজটি করলে আপনারা খারাপ লিখবেন- এটাও আমরা চাই না। কাজেই সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় আমরা বিশ্বাস করি; আবার শিল্পীর স্বাধীনতাতেও আমরা বিশ্বাস করি। এই দুটোর সমন্বয় করে আমরা আসলে ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে চাই। অনেক বড় ইন্ডাস্ট্রি এখন। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।’ কথাগুলো আজ মঙ্গলবার দুপুরে টেলিভিশন অভিনয়শিল্পী সংঘের সঙ্গে সাংবাদিকদের গোলটেবিল বৈঠকে বলেছেন বিশিষ্ট অভিনেতা ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ।
রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকের শিরোনাম রাখা হয়েছে ‘অভিনয় শিল্পী এবং বিনোদন সংবাদকর্মী সংযোগ’। অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ের শিল্পীদের অনেক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ ও অন্য আরো অনেক বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেন সাংবাদিক ও শিল্পীরা। বৈঠকের শুরুতে অভিনয় শিল্পী সংঘের সহসভাপতি আজাদ আবুল কালাম অভিনয় শিল্পী সংঘের একটি বিবৃতি পাঠ করে শোনান। বিবৃতিতে তিনি বর্তমানে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
আজাদ আবুল কালাম বলেন, ‘সাংবাদিকতার ছাত্র হিসেবে এই পেশা সম্বন্ধে আমার তাত্ত্বিক জ্ঞানটুকু অন্তত আছে এবং অভিনয়কর্মী হওয়ার সুবাদে পেশাদার অভিজ্ঞতাও আমার হয়েছে। তাই আমি সংবাদকর্মী এবং অভিনয়কর্মীর মনস্তত্ব বোঝার চেষ্টা করছি স্বল্প পরিসরে।’
অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহিদুল আলম সাচ্চু বলেন, ‘শুটিং চলাকালীন শিল্পীদের মুঠোফোন বন্ধ রাখার নির্দেশ আমরা দিয়েছি। দেখি আমরা নিউজ এজেন্সি করতে পারি কি না। সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে গোলটেবিল বৈঠক আমরা ভবিষ্যতে আরো করব। আমাদের বিশ্বাস টেলিভিশন আমাদের সুদিনের পথে যাবে।’
আহসানুল হক মিনু বলেন, ‘সংবাদ যাচাই ও বাছাই করে করতে হবে। শিল্পীদের আচরণও ভালো হতে হবে। এখন গঠনমূলক সমালোচনা ভিত্তিক সংবাদ কম হয়। সমালোচনা ভিত্তিক সংবাদ হওয়া প্রয়োজন।’
অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বলেন ‘শিল্পীরা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও কাজ করে। আপনাদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ থাকলে সেগুলো আমরা সমাধান করব।’
বন্যা মির্জা বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমরা শিল্পী কিংবা সাংবাদিকরা সবাই ভুক্তভোগী হয়েছি। তবে আমরা সবাই কীভাবে একসাথে কাজ করতে পারি- এটাই আমাদের আলোচনার বিষয় আজ। আমি চাই ‘বিনোদন সাংবাদিক’ কথাটা না বলতে কারণ অন্য সাংবাদিকদের নির্দিষ্ট করে কোনো সাংবাদিক আমরা সাধারণত বলি না। বিনোদনে যাঁরা কাজ করেন তাঁরাও সাংবাদিক। প্রকৃতপক্ষেই তাঁরা সাংবাদিক। আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশে দায়িত্ববান সাংবাদিক আছেন। অনুসন্ধান করেই তাঁরা সংবাদ সংগ্রহ করেন।’
অন্যদিকে, সাংবাদিকরা শিল্পীদের অপেশাদারি আচরণ, পিআরকে দিয়ে পাঠানো মিথ্যা সংবাদ ও অন্য আরো অনেক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।
টেলিভিশন অভিনয় শিল্পী সংঘের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন লুৎফর রহমান জর্জ, জাকিয়া বারী মম, রওনক হাসান, সুজাত শিমুল ও ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর।
গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি টেলিভিশন অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত শহিদুল আলম সাচ্চু এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আহসান হাবিব নাসিম। সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আজাদ আবুল কালাম, জাহিদ হাসান শোভন ও তানভিন সুইটি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন অর্থ সম্পাদক তানিয়া আহমেদ।
অন্যদিকে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন আনিসুর রহমান মিলন ও রওনক হাসান। সাংগঠনিক সম্পাদক হন লুৎফর রহমান জর্জ, অনুষ্ঠান সম্পাদক বন্যা মির্জা, প্রচার ও প্রকাশন সম্পাদক ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, দপ্তর সম্পাদক শামস সুমন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ওমর আয়াজ ওনি ও আইন ও কল্যাণ সম্পাদক শামীমা তুষ্টি।
কার্যনির্বাহী পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন জাকিয়া বারী মম, ইন্তেখাব দিনার, আহসানুল হক মিনু, নিকুল কুমার মণ্ডল, সুজাত শিমুল, ও সেলিম মাহবুব। টেলিভিশন অভিনয় শিল্পী সংঘে প্রায় ৮০০ জন শিল্পী সদস্য রয়েছেন।