‘আলতা বানু সিনেমাটি দেখলে দর্শক কিছু না কিছু পাবে’

Looks like you've blocked notifications!
দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

অরুণ চৌধুরী পরিচালিত ‘আলতা বানু’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে গত শুক্রবার। ছবিটিতে প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন ও জাকিয়া বারী মম। ছবিটিতে নিজের চরিত্র, কাজের অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন গুণী অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন।

এনটিভি অনলাইন : ‘আলতা বানু’ ছবিতে আপনার চরিত্র সম্পর্কে কিছু জানতে চাই…

আনিসুর রহমান মিলন : ছবিতে আমার চরিত্রের নাম রানা। সে দুবাইফেরত একটা ছেলে। দুবাই থেকে ১০ দিনের ছুটিতে সে দেশে আসে বিয়ে করার জন্য। অল্প শিক্ষিত একটা ছেলে। মা-বাবার সেবা করবে এমন মেয়ে বিয়ে করতে চায় সে। দুই বছর পর পর সে দেশে আসবে। এই হচ্ছে তার স্বপ্নের জায়গা।

এনটিভি অনলাইন : ছবির গল্পে এমন কিছু কি আছে যা আমাদের সমাজের অনেক দিক বদলাতে সাহায্য করবে?

আনিসুর রহমান মিলন : আমাদের দেশে এখনো বাল্যবিবাহ হয়। যৌতুকপ্রথা আছে ভেতরে ভেতরে। এখনো শিশু নির্যাতন হচ্ছে। এই বিষয়গুলো সচেতনভাবে দেশ থেকে বের করার জন্য আমরা সবাই খুব চেষ্টা করছি। সেটা সরাসরি বলে হোক কিংবা পত্রিকায় লেখালেখি করে হোক।

আমাদের টেলিভিশন প্রোকাডশন কিংবা গল্পের মাধ্যমে হোক, কুসংস্কারও আছে আমাদের সমাজে। কুসংস্কারের অনেক বিষয় ‘আলতা বানু’তে দেখানো হয়েছে।

যেমন বিয়ের তারিখ ঠিক হয়েছে। এমন সময় গ্রামের বাড়িতে এক বৃদ্ধ মারা গেল। যার বয়স কি না নব্বই। এর পরে ধরে নেওয়া হয় হবু বউ অপয়া।

কেউ স্বপ্নে দেখেছে বাবার পায়ের ওপর দিয়ে সাপ চলে যাচ্ছে। এর মানে বিয়ে অশুভ। সেই মুহূর্তে বিয়ের পাত্র এসব বিশ্বাস করে ফেলে। এই কুসংস্কার বিশ্বাসের কারণে যে একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এটা বোঝার দায়িত্ব কার? এসব বিশ্বাসের কারণে পরিবারটি যখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে, তখনই ছেলেটা তার ভুল বুঝতে পারে। যাকে সে একসময় বিয়ে করতে রাজি হয় না, তাকে সমাজের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

এনটিভি অনলাইন : ‘আলতা বানু’ ছবির দর্শক কারা বলে আপনি মনে করছেন?

আনিসুর রহমান মিলন : আলতা বানু সিনেমাটি দেখলে দর্শক কিছু না কিছু পাবে। ছবির দর্শক অবশ্যই আছে। আমাদের দেশে দর্শকদের এখনো নানাবিধ গল্পের জায়গায় আমরা পৌঁছাতে পারিনি। এখনো আমরা সিনেমা বলতে বুঝি কমার্শিয়াল আর একটা হলো নন-কমার্শিয়াল। এটা বললেই কিন্তু দর্শক ভাগ হয়ে যাচ্ছে। আগে সিনেমা দেখতে যাওয়ার জন্য সব ধরনের দর্শক ছিল। এই জায়গাটা আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। আলতা বানু সিনেমায় অনেক তথ্য আছে। যা আমাদের সমাজে খুবই দরকার। এরই মধ্যে ছবিটি টরন্টোর সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যাওয়ার জন্য মনোনীত হয়েছে।

এনটিভি অনলাইন : ছবির অভিনেত্রী মমর সঙ্গে এর আগেও আপনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন এবং করছেন। মমর সঙ্গে আপনার কাজের রসায়ন জানতে চাই…

আনিসুর রহমান মিলন : যেহেতু অনেক কাজ. তাহলে বোঝা যাচ্ছে রসায়ন অনেক ভালো। একজন অভিনেতা-অভিনেত্রীর বোঝাপড়ার জায়গাটা যদি ভালো হয়, তাহলে কাজটাও ভালো হয়। সিনেমার ক্ষেত্রে মমর সঙ্গে আমার প্রথম বোঝাপড়া শুরু হয় ‘প্রেম করব তোমার সাথে’ ছবির মাধ্যমে। আমরা যখন পারফরম্যান্স যখন করি, তখন বুঝেশুনে করি। মমর সঙ্গে কাজ করতে আমার অনেক কমফোর্ট লাগে। শুটিংয়ের আগে চরিত্র নিয়ে আমাদের আলাপ হয়। এমনকি আমরা শটের মধ্যেও আলাপ করি।

জুটি প্রথা এখন চলে গেছে। সেই সময় আর নাই। মম-মিলনকে নিয়ে ছবি হচ্ছে, কারণ দর্শক ও পরিচালকরা সেটা চাচ্ছেন।

এনটিভি অনলাইন : এবার অন্য প্রসঙ্গে কথা বলি। এখন কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?

আনিসুর রহমান মিলন : রাজু খান পরিচালিত ‘মধ্যবর্তিনী’ ধারাবাহিক নাটকটি দীপ্ততে প্রচারিত হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প থেকে নাটকটি নির্মাণ হয়েছে। এখানে আমার চরিত্রের নাম ইমরান।

আমরা পারিবারিক অনেক নাটকে অভিনয় করি, সেখানে অনেক সময় মনস্তাত্ত্বিক জায়গাগুলোকে আমরা স্পর্শ করি না। বাহ্যিক জায়গাগুলোকে স্পর্শ করি। মধ্যবিত্ত কিংবা দারিদ্র্য। ‘মধ্যবর্তিনী’ নাটকে মনস্তাত্ত্বিক জায়গাটি নিয়ে পুরোপুরি কাজ করার চেষ্টা করছে পরিচালক।

এনটিভি অনলাইন : আসছে ঈদের নাটকের কাজ কি শুরু করে দিয়েছেন?

আনিসুর রহমান মিলন : ঈদের কাজ শুরু হয়ে গেছে। সম্প্রতি শাহনেওয়াজ রিপনের ‘বেহালা’ শিরোনামে একটি নাটকে অভিনয় করেছেন। নাটকটি গতানুগতিক গল্পের বাইরে। নাটকে আমার বিপরীতে মম অভিনয় করেছেন।