রোহিঙ্গা শিশুদের দেখে কেঁদে ফেললেন বাপ্পী
‘আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, কিন্তু অনেক গল্প শুনেছি মুক্তিযুদ্ধের। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে আমার যেন সে সময়ের দৃশ্যই চোখের সামনে ভেসে উঠল। একেকটা শিশুর মধ্যে নিজেকে অনুভব করলাম। যুদ্ধের সময় এভাবেই তো আমাদের বাপ-চাচারা ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। চোখের কোণে পানি চলে এলো। এমন সময় এক রোহিঙ্গা শিশু আমাকে জড়িয়ে ধরল। তার হাসি দেখে মনে হলো, বিশ্ব দেখা আমার হয়ে গেছে। মনে হলো মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, কিন্তু এখন মুক্তিযুদ্ধ দেখছি। সে সময় সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি সারা জীবন অসহায় শিশুদের নিয়ে কাজ করব।’ গতকাল জমাতলি রোহিঙ্গা শিবির থেকে ফিরে এনটিভি অনলাইনকে এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা জানান নায়ক বাপ্পী চৌধুরী।
বাপ্পী আরো বলেন, ‘আমি গতকাল সকাল ৮টার সময় সেখানে যাই, সারা দিন ছিলাম। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের কর্মীরা অনেক সহযোগিতা করেছেন। তাঁরাই আমাকে পুরো জায়গাটা ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন। হাজার হাজার বাঁশের তৈরি ছোট ছোট ঘর। সেখানে বাস করেন মিয়ানমারের নির্যাতিত ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। শিশুদের মধ্যে অধিকাংশেরই পরিবার নেই। বিষয়গুলো অনেক কষ্টের। সেখানে একটি চাইল্ড ফ্রেন্ডলি স্পেসে গিয়ে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা দেখেছি। শিশুদের সঙ্গে লুডু, ফুটবল খেলেছি। সবার মধ্যে বসে চকলেট খেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে বাপ্পী বলেন, ‘সেখানে আমি গিয়ে যা দেখলাম, কোনো মানুষেরই থাকা-খাওয়া, শিশুদের খেলা, পড়াশোনা সবকিছুই যেন ঠিকমতো চলছে। এতগুলো মানুষ, কিন্তু কোথাও কোনো সমস্যা নেই।’
বাপ্পী আরো বলেন, ‘আমি এখন থেকে শিশুদের নিয়ে আরো বেশি করে কাজ করব। কুমিল্লায় আমার কিছু ফ্যান মিলে একটি স্কুল করেছে আরো তিন বছর আগে। সেখানে ৫০ জনের মতো শিশুকে বিনামূল্যে শিক্ষা দেওয়া হয়। আমি চিন্তা করেছি, এ কাজটি আমি সারা দেশে করব। এবং শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করব। আমি বিশ্বাস করি, সুন্দর একটি পৃথিবী পেতে আমাদের শিশুদের সুন্দর পরিবেশ দিয়ে বড় করতে হবে।’
বাপ্পী চৌধুরী বর্তমানে ‘নায়ক’ ছবি নিয়ে ব্যস্ত আছেন। গত মঙ্গলবার ছবিটির শুটিং শেষ হয়। এতে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছেন অধরা খান। ছবিটি পরিচালনা করছেন ইস্পাহানি আরিফ জাহান। শুটিং শেষ করেই বাপ্পী গতকাল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান।