সেক্রেড গেমস
ত্রিবেদী কি তবে মারা গেছে?
নতুন ওয়েব সিরিজ ‘সেক্রেড গেমস’ নিয়ে এখন আলোচনা তুঙ্গে। গত ৬ জুলাই নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায় তারকা পরিচালক ও তারকা অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে তৈরি ধারাবাহিক ‘সেক্রেড গেমস’। প্রথম মৌসুমের জন্য আটটি পর্ব নিয়ে নির্মাণ করা হয় এই সিরিজ। ‘সেক্রেড গেমস’ যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন অনুরাগ কশ্যপ ও বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাইফ আলি খান, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী ও রাধিকা আপ্তে।
ধারাবাহিকটি শুরু হয় একটি তথ্য দিয়ে, সেটি হলো ২৫ দিনের মধ্যে মুম্বাই ধ্বংস হয়ে যাবে, আর বেঁচে যাবে শুধু ত্রিবেদী। তাই আট পর্বজুড়েই খোঁজ চলে মুম্বাই ধ্বংস করার পেছনে কোন চক্র রয়েছে, আর ত্রিবেদীই বা কে? ত্রিবেদী চরিত্রটি নিয়ে তাই দর্শকদের মাঝে আগ্রহের শেষ নেই। এই মৌসুমের শেষ পর্বে ত্রিবেদীকে দেখা যায় একটি পাতালঘরে, হাত বাঁধা অবস্থায় বসে আছে। সে মারা গেছে কি না, তা বোঝা যায় না। দর্শকদের মনে প্রশ্ন, আসলে কি ত্রিবেদী বেঁচে আছে, না মারা গেছে? এই প্রশ্ন সিরিজটির পুলিশ চরিত্র সরতাজ সিংয়েরও।
ত্রিবেদী বেঁচে আছে কি না, বেঁচে থাকলে পরবর্তী সময়ে তার ভূমিকা কী হবে, এ ধরনের কৌতূহলী প্রশ্ন নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ডটকম ইউকে।
সিরিজের শুরুতে দেখা যায়, হঠাৎ একদিন পুলিশ অফিসার সরতাজ সিংয়ের ফোনে অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে একজন বলে, ২৫ দিনের মধ্যে এই শহর ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই সরতাজকে শহরটি বাঁচানোর কথা বলা হয়। এ ছাড়া আরো বলা হয়, এই শহরের সবাই মারা যাবে শুধু ত্রিবেদী ছাড়া। পুলিশ অফিসার সরতাজকে ফোন করে গণেশ গাইতোন্ড। গণেশ হচ্ছে শহরের মুম্বাইয়ের নামকরা ডন। এভাবে সরতাজ ২৫ দিনের রহস্য উদ্ঘাটন করতে বের হয়। গণেশ গাইতোন্ডে তার জীবনের কাহিনী বলতে থাকে সরতাজকে। অবশ্য শেষ পর্বে এসে এক অস্ত্রের কারখানার সন্ধান পায় এই পুলিশ অফিসার এবং প্রাপ্ত প্রমাণাদি থেকে সন্দেহের তীর যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিপিন ভোসালের দিকে।
সরতাজ চরিত্রে সাইফ আলি খান, গণেশ গাইতোন্ডের চরিত্রে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিপিন ভোসালের চরিত্রে গিরিশ কুরকারনি অভিনয় করেছেন। এ ছাড়া র-এর এজেন্টের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাধিকা আপ্তে।
‘সেক্রেড গেমসে’ ত্রিবেদীকে নিয়ে দর্শকরা অনেক ধরনের মন্তব্য করেছেন। এক দর্শক লিখেছেন, ‘ত্রিবেদী আসলেই মারা গেছে।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘ত্রিবেদী মারা যায়নি, আসলে সে ঘুমাচ্ছে বা অচেতন হয়ে আছে।’ এক পাঠক বলেছে, ‘আমি মনে করছি ত্রিবেদী জেগে উঠবে এবং বিকিরণ হওয়ার আগেই সে বাঙ্কার থেকে বেরিয়ে আসবে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ত্রিবেদী বেঁচে থাকে, তাহলে তাঁর উদ্দেশ্যটা তখন কী হবে?’
আরেকজন দর্শক বলেছেন, ‘গণেশ গাইতোন্ডে নিজেকে মারার আগে, ত্রিবেদীর ওপর প্রতিশোধ নিতেই তাকে বাঙ্কারের ভেতর চেয়ারে বেঁধে রাখে।’
অনেকে লিখেছেন যে, ২৫ দিনের সময়ের মধ্যে ১১ দিনের মাথায় ত্রিবেদীকে খুঁজে পায় সরতাজ। দ্বিতীয় মৌসুমে ত্রিবেদীর বিষয়টা খোলাসা হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করে দর্শকরা।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ‘সেক্রড গেমস’ নিয়ে এরই মধ্যে ভারতের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কংগ্রেস ‘সেক্রেড গেমসে’র নির্মাতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কংগ্রেস বলছে, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর বেশ কিছুর কাজের সমালোচনা করা হয়েছে এই ওয়েব সিরিজে। একই সঙ্গে তথ্যের বিকৃতি করার অভিযোগ করেছে কংগ্রেস।
এ নিয়ে রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেছেন, ‘বিজেপি ও আরএসএস মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করতে চায়। কিন্তু আমি মনে করি, এগুলো মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। আমার বাবা (রাজীব গান্ধী) দেশের জন্য কাজ করেছেন, প্রাণও দিয়েছেন। একটি কাল্পনিক ওয়েব সিরিজ বাবার স্মৃতি মুছে দিতে পারবে না।’
অবশ্য এ বিষয় নিয়ে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য, বলিউড পরিচালক মধুর ভান্ডাকর, অনুরাগ কাশ্যপ ও অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর টুইট করেছেন। তাঁদের দাবি, সিরিজে কাউকে অসম্মান করা হয়নি।