শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শিল্পীদের স্লোগান
নিরাপদ সড়কের দাবিতে মিডিয়ার বিভিন্ন অঙ্গনের শিল্পীরাও গতকাল ছিলেন রাজপথে। অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন ছিলেন দুপুরে গতকাল বনশ্রীতে। সেখানে তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন।
শাওন বলেছেন, ‘আমরা মায়েরা তোমাদের পাশাপাশি আছি। তোমরা স্টুডেন্টরা যা করেছ, তা আমরা করতে পারিনি। তোমরাই করে দেখিয়েছ।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শাওন আরো বলেন, “‘বিচার চাই বিচার চাই’ বলে ফেসবুকে গলা ফাটাই! কিছুই করতে পারি না। অথচ আমাদের সন্তানরা নামে রাজপথে। কী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ অভিব্যক্তি তাদের! কী দৃপ্ত তাদের স্লোগান ‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবেই তুমি বাংলাদেশ’।”
অন্যদিকে, গতকাল সকালে উত্তরার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহমত পোষণ করে রাস্তায় উপস্থিত হয়েছিলেন একঝাঁক শিল্পী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নির্মাতা অরণ্য আনোয়ার, সাগর জাহান, চয়নিকা চৌধুরী, সকাল আহমেদ প্রমুখ। অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন লুৎফর রহমান জর্জ, মনিরা মিঠু, জাকিয়া বারী মম, নাদিয়া আহমেদ, মিশু সাব্বির, শবনম ফারিয়া, অর্ষা, তৌসিফ মাহবুব প্রমুখ।
তৌসিফ মাহবুব জানান, এই আন্দোলনে ছাত্রদের সমর্থন করেন তিনি। প্রয়োজনে রাজপথে প্রতিদিন নামতে রাজি তিনি।
অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে রয়েছেন। ‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবেই তুমি বাংলাদেশ’ এই স্লোগান কাগজে লিখে রাজপথে দাঁড়ান তিনি গতকাল। এফডিসির সামনে অনেকক্ষণ অবস্থান করেন তিনি।
নওশাবা বলেন, ‘আমরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চাই।’
শাহবাগেও ছিল তারকাদের উপস্থিতি। সংগীতশিল্পী কোনাল, লুৎফর হাসান, সাব্বির, পারভেজ, উপস্থাপক ফারজানা ব্রাউনিয়া, আর জে টুটুলসহ অনেকেই শাহবাগে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্লোগান দেন।
ফারজানা ব্রাউনিয়া বলেন, ‘স্যালুট জানাই এসব নবপ্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের। আমরা আন্দোলনকারী না। আমরা আন্দোলনকারীদের মা ও বোন। আমরা পেছন থেকে তাদের পাশে থাকব।’
কোনাল বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা করার জন্য এখানে এসেছি। আমরা যা করতে পারিনি, তোমরা সেটা করেছ।’
গত রোববার দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাস প্রতিযোগিতা করে মিরপুর থেকে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে আসছিল। এ সময় ফ্লাইওভারের শেষ দিকে, রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল একদল শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নেমেই দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন।
নিহতরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম।
ওই ঘটনার পর থেকেই বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। টানা কয়েক দিনের এই বিক্ষোভের জেরে রাজধানীর ঢাকা প্রায় অচল হয়ে যায়।