আমি সেরা মা হতে পারি : সানি লিওন
সানি লিওন। বিশ্বজুড়ে আলোচিত আবেদনময়ী নাম। ছিলেন নামকরা পর্নো তারকা। ২০১২ সালে জিসম-২ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বলিউডে অভিষেক। প্রশংসা, নিন্দা সবই জুটেছে তাঁর। পিছপা হননি। এগিয়ে গেছেন সামনে। অভিনয়, নাচ, ভঙ্গি সব দিয়েই জয় করেছেন ভক্তের হৃদয়। জানালেন, তিনি তাঁর জীবনকে ভালোবাসেন আর তা উন্মুক্ত। দৃঢ়চিত্তে বললেন, আমি সেরা মা হতে পারি।
সানি লিওন শুধু নিজের ক্যারিয়ার নিয়েই ব্যস্ত থাকেন না। উপভোগ করেন দত্তক নেওয়া তিন সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে। এই শিশুরা তাঁর জীবনকে বদলে দিয়েছে।
কানাডায় জন্ম নেওয়া এই ইন্দো-আমেরিকান অভিনেত্রী মূলধারার বলিউডে আসেন ‘জিসম-২’ ছবি দিয়ে। এরপর একে একে অভিনয় করেন ‘রাগিনি এমএমএস-২’, ‘এক পেহেলি লীলা’, ‘কুচ কুচ লোচা হ্যায়’, ‘মাস্তিজাদি’ ও ‘তেরা ইন্তেজার’। শোনা যাচ্ছে, মালয়লায়াম সিনেমায়ও অভিষেক হতে যাচ্ছে সানির।
কয়েক দিন হলো মুক্তি পেয়েছে সানি লিওনের জীবনীভিত্তিক ওয়েব সিরিজ ‘করণজিৎ কউর : দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব সানি লিওন’। এ নিয়ে দর্শক-ভক্ত মহলে চলছে নানা আলোচনা। যখন পেছন ফিরে তাকান, কী অনুভব করেন? সম্প্রতি এ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হলে লস এঞ্জেলস থেকে ই-মেইলে সানি বলেন, ‘হুম, আমি আমার জীবনকে এখন ভালোবাসি।’ খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
গত বছর এ অভিনেত্রী ড্যানিয়েল ওয়েবারকে বিয়ে করেন। তারপর একদিন সবাইকে অবাক করে দিয়ে ঘোষণা দেন, তিনি ও তাঁর স্বামী লাটুর গ্রাম থেকে এক কন্যাশিশু দত্তক নিয়েছেন। নাম নিশা। মার্চে ফের অবাক করে দিয়ে জানান, তিনি আরো দুই সন্তান দত্তক নিয়েছেন। নাম নোয়া ও আশের।
সম্প্রতি এমটিভির তরুণনির্ভর রিয়েলিটি শো স্প্লিতসভিয়া-এর ১১তম পর্বে সানি লিওন বলেন, মাতৃত্ব তাঁকে বদলে দিয়েছে। বলেন, ‘আমি বদলে গেছি এবং বিশ্বাস করি, এটা হয়েছে ভালোর জন্যই। আমি যখন তিন সন্তানের দিকে তাকাই, তখন গভীর ভালোবাসা অনুভব করি।’
তিন সন্তানের প্রতি আপনাকে মনোযোগ দিতে হচ্ছে, এটা কি ক্যারিয়ারকে পিছিয়ে দেবে?
সানির সাফ জবাব, ‘বিশ্বাস করি, আমি সেরা মা হতে পারি, যদি আমি কাজ করি আর ওদের সঙ্গে সময় কাটাই। আমি কাজ ভালোবাসি। আশা করি, আমি ও আমার স্বামীর মতো বাচ্চারাও কঠোর পরিশ্রম করে বড় হবে।’
৩৭ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী বলেন, ড্যানিয়েল ও তিনি খুব সতর্কতার সঙ্গে তাদের সময় ভাগ করে নেন। ‘আর তাই আমাদের বাচ্চারা কখনোই আমাদের মনোযোগ, যত্ন ও ভালোবাসার অভাববোধ করেন না।’
বলিউডে যখন সানি লিওনের অভিষেক হয়, তখন তাঁকে নানা কুৎসা, সমালোচনা ও নিন্দার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তিনি মনে করেন, এসব অপরিপক্কতা ও অপ্রয়োজনীয়।
‘আমি অতীতকে মুছে ফেলতে চেষ্টা করি। আমি নিজেকে নেতিবাদী হতে দিতে চাই না। তাই আমি জীবন থেকে ইতিবাচকতা খুঁজি, এমনকি মানুষের মধ্যেও। এটার বদল কখনো হবে না। কিন্তু আমি খুবই বিরক্ত হয়েছিলাম যখন মিডিয়ায় এসব কাণ্ডজ্ঞানহীতা প্রকাশ পেতে থাকে। এসব অপরিপক্কতা, অপ্রয়োজনীয়।’
সানি লিওনের হৃদয় কোমল, আবেগী। নিজের বায়োপিক দেখে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ১০ বছর আগে মারা যান তাঁর মা। এর দুই বছর পরই ২০১০ সালে ক্যানসারে দীর্ঘ দিন ভোগার পর ইহলোক ত্যাগ করেন তাঁর বাবা। বায়োপিকে সেটা দেখেই কষ্ট পান তিনি।
ওই সময় সানি লিওন বলেন, বায়োপিকে যাঁরা অভিনয় করেছেন তাঁরা তাঁর আসল বাবা-মা নন। তবুও স্ক্রিনে বাবাকে ক্যানসারে ভুগতে দেখা বা মাকে কফিনে শুয়ে থাকতে দেখাটা মেনে নেওয়া অত সহজ নয়।
দুঃখ করে সানি লিওন বলেন, ‘বাবা-মা চলে যাওয়ার পর ভেবেছিলাম সত্যিটা মেনে নিতে পারব। কিন্তু সত্যিটা বোধহয় এখনো মানতে পারি না।’
কানাডাবাসী মধ্যবিত্ত শিখ পরিবারের মেয়ে সানি লিওন কীভাবে পর্নো ইন্ডাস্ট্রিতে জনপ্রিয় হয়েছিলেন, কীভাবে সেই পেশা ছেড়ে বলিউডে প্রবেশ করলেন, এই সব নিয়েই তৈরি ‘করণজিৎ কউর : দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব সানি লিওন’।