বিক্রি হয়ে যাচ্ছে রাজ কাপুরের স্বপ্নের স্টুডিও

আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল, বিক্রি হয়ে যাচ্ছে রাজ কাপুরের স্বপ্নের ‘আরকে স্টুডিও’। কাপুর পরিবারের সবার সম্মতিতেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সাত দশকের পুরোনো এই স্টুডিও, এ খবর নিশ্চিত করলেন প্রবীণ অভিনেতা ঋষি কাপুর।
খুব কষ্ট হচ্ছিল ঋষি কাপুরের। বললেন, ‘আবেগ তো মিশে আছেই। কিন্তু কী করা যাবে? স্টুডিওর ব্যয়ভার বহন করা প্রায় হাতি পোষার সমান হয়ে যাচ্ছে।’
ঋষি কাপুর বলেন, ‘স্টুডিওর সঙ্গে আমাদের ভাইদের বন্ধন অটুট। কিন্তু আমাদের নাতি-নাতনিরা? ওদের মধ্যে কোনোদিন মতভেদ দেখা দিলে কী হবে স্টুডিওর? যেভাবে প্রায়ই কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেভাবেই শেষ হয়ে যাবে আরকে স্টুডিও।’
প্রবীণ এ অভিনেতার ভয়, ‘পরিবারের মানুষজনের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবেই। তাই বলে কি আরকে স্টুডিওর ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেবে আদালত? আমার বাবা কি তাঁর বহু কষ্টের ফসল ভবিষ্যতে আদালতের চার দেয়ালের মধ্যে দেখে খুশি হতেন?’
অনেক সুপার-ডুপার হিট ছবির শুটিং হয়েছে আরকে স্টুডিওতে। এর মধ্যে অন্যতম ‘আওয়ারা’ (১৯৫১), ‘বুট পালিশ’ (১৯৫৪), ‘শ্রী ৪২০’ (১৯৫৫), ‘লাগতে রাহো’ (১৯৫৬), ‘মেরা নাম জোকার’ (১৯৭০) ও ‘ববি’ (১৯৭৩)।
হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাপুর পরিবারই সম্ভবত প্রথম, যারা আরকে স্টুডিওর মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিচ্ছে। কাপুর পরিবারের সদস্য বলিউডের নায়িকা কারিনা কাপুরও বেদনার্ত। বলেছেন, এ স্টুডিও তাঁর ঘরের মতো। আজীবন হৃদয়ে থাকবে।
এ স্টুডিও তৈরি করেছিলেন কারিনার দাদা রাজ কাপুর। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
তবে স্টুডিও বিক্রির ব্যাপারে কারিনা কিছুই জানেন না। জানান, পরিবারের বড়রা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘আরকে স্টুডিও সবসময় আমাদের হৃদয়ের কাছাকাছি থাকবে। এটা আমাদের পরিবারের ঘর। এটা গৌরবময় স্টুডিওগুলোর অন্যতম, যা আর তৈরি হবে না’, বলেন কারিনা।
ল্যাকমি ফ্যাশন সপ্তাহের স্টেজ পারফর্ম শেষে কারিনা আইএএনএসকে বলেন, ‘আমি জানি না আসলে কী হয়েছে। চার-পাঁচদিন ধরে বাবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে না... আমরা সবাই এর করিডরে হেঁটে বেড়ে উঠেছি।’
কারিনা জানান, আরকে স্টুডিও বিক্রি তাঁর বাবা, ভাই ও পরিবারের বড়দের ব্যাপার। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিলে ৭০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ স্টুডিও বিক্রি হবেই।
গত বছর রিয়েলিটি শো ‘সুপার ড্যান্সার’-এর শুটিংয়ের সময় আগুন লাগে আরকে স্টুডিওতে। স্টুডিওর বেশ কিছু অমূল্য সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভস্মীভূত হয় অভিনেত্রীদের পোশাক। নার্গিস, বৈজয়ন্তীমালা থেকে শুরু করে ঐশ্বরিয়া রাইদের সেই সব পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের গয়নাও ছাই হয়ে যায়।
রাজ কাপুরের মৃত্যুর আগের শেষ ছবি ‘রাম তেরি গঙ্গা মাইলি’র প্রযোজক ছিল আরকে স্টুডিও। যাহোক, ঐতিহ্যবাহী এ স্টুডিওটি কবে বিক্রি হচ্ছে, তা এখনো জানাননি পরিবারের কেউ।