‘কেউ আমাকে ডাক দেয় না, কেউ খুঁজেও না’

Looks like you've blocked notifications!

আদরের মেয়ে সাফরাহকে ‘বাবান’ বলে ডাকতেন প্রয়াত ব্যান্ড কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু। আর বাবাকে মেয়ে ডাকতেন ‘বাবুই’ বলে। মেয়ে সুদূর প্রবাসে থাকায়, ভিডিও কলে  কথা হতো বাবা-মেয়ের।

মাত্র পাঁচদিন আগে আইয়ুব বাচ্চুর চলে যাওয়া এখনো যেন মেনে নিতে পারেননি ফাইরুজ সাফরাহ আইয়ুব। এখনো বাবার কথাগুলো, ডাকগুলো শুনতে চাইছেন তিনি।

তাই তো, গতকাল সোমবার নিজের ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘মনে হয় এই তো এখনি তুমি আমাকে ডাক দিবে  বাবান, ও মা ,মা রে আমার অফুত। কিন্তু কেউ তো আর ডাক দেয় না বাবুই। কেউ আমাকে খুঁজেও না। কার সাথে আমি ভিডিও কল করব?’

এর আগে আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর দুদিন পর সাফরাহ ফেসবুকে লেখেন, ‘বাবুই রাজার মতো বাঁচতে এবং মরতে চেয়েছিলেন এবং তিনি সেটাই করেছেন। গত তিনদিনে আমরা যে পরিমাণ ভালোবাসা, সহযোগিতা পেয়েছি আমি এবং আমার পরিবার তার জন্য কৃতজ্ঞ। বাবুই যোদ্ধা ছিলেন, স্বনির্ভর মানুষ ছিলেন। তিনি সব সময় বলতেন, না কখনোই একটি পছন্দ হতে পারে না। তিনি তাঁর ভক্তদের ভালোবাসতেন এবং বলতেন, তোমরাই আমার অক্সিজেন। আর গিটারের প্রতি তাঁর যে পরিমাণ ভালোবাসা ছিল, তা আর কোনো কিছুর প্রতিই ছিল না। সারা দেশের কাছে তিনি একজন রকস্টার, গিটারিস্ট, গায়ক ছিলেন। আর আমার কাছে ছিলেন বাবুই। বাবুই আমাকে এবং আমার ভাইকে যোদ্ধা হতে শিখিয়েছেন, কোনো অবস্থাতেই হাল না ছাড়তে, আলাদা হতে  শিখিয়েছেন। থ্যাংক ইউ বাবুই, আমাকে পথ চলতে শেখানোর জন্য। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন এবং কেউ তাঁর প্রতি কোনো ক্ষোভ রাখবেন না। বাবুই তোমাকে খুব ভালোবাসি। আমি জানি এখনো তুমি আমার সঙ্গেই রয়েছ। কারণ হিরোরা কখনো মরে না। আর তুমি কখনোই হিরো ছাড়া অন্য কিছু ছিলে না।’

গত ১৮ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আইয়ুব বাচ্চু। তাঁর এক ছেলে আহনাফ তাজোয়ার ও এক মেয়ে ফাইরুজ সাফরাহ আইয়ুব। তাঁরা অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় বসবাস করেন। বাবার মৃত্যুর খবর শুনেই দেশে এসেছিলেন তাঁরা।

গত ১৮ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন আইয়ুব বাচ্চু। দ্রুত তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসকরা জানান, তিনি আর নেই। পরের দিন শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় ঈদগাহে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় তাঁর গানের স্টুডিও মগবাজারে এবি কিচেনে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই কার্যালয়ে। সেখানে তৃতীয় জানাজা হয়। এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ রাখা হয় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। সেখানেও প্রচুর মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হন আইয়ুব বাচ্চু।

পরের দিন শনিবার চট্টগ্রামে মায়ের কবরের পাশেই শায়িত হন এই কিংবদন্তি।