হ্যাশট্যাগ হি টু আন্দোলন শুরুর আহ্বান রাখির

রাখি সায়ন্ত একজনই! ভারতজুড়ে এখন চলছে যৌন নিপীড়নবিরোধী ‘হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন’। পুরো ভারতের মানুষ যখন কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা চেয়ে সরব হয়েছেন, যৌন হেনস্তার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন, তখন রাখি বললেন, মানুষের উচিত ‘হ্যাশট্যাগ হি টু’ আন্দোলন করা। তাঁর যুক্তি, যৌন হেনস্তার শিকার শুধু নারীই নয়, পুরুষও।
বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকার ও গণেশ আচার্যর বিরুদ্ধে বলিউডের সাবেক অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তর যৌন হেনস্তার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাখি সায়ন্ত বলেছেন, চলমান মি টুর ভিত্তিতে বিচার করা ঠিক নয়।
রাখি বলেছেন, মানুষের উচিত ‘#মেনটু’ (#MenToo)’ ও ‘#হিটু’ (#HeToo) আন্দোলন শুরু করা। এতে যেসব পুরুষ যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন, তাঁরাও তাঁদের হেনস্তার গল্পগুলো বলতে পারবেন। এবং তাঁদের কথাও শুনতে হবে।
রাখির প্রশ্ন, নারীর কথা শোনা হলে পুরুষের কথা কেন শোনা হবে না?
গত মাসে বঙ্গতনয়া তনুশ্রী দত্ত অভিযোগ করেন, ২০০৮ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির একটি আইটেম গানের শুটিং চলাকালে নানা পাটেকার তাঁকে হেনস্তা করেছিলেন। এর পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। ১০ বছর পর ভারতে ফিরে একটি জাতীয় টেলিভিশনে হেনস্তা নিয়ে মুখ খোলেন তনুশ্রী। তিনি এ-ও বলেন, ওই সময় যখন তিনি শুটিং সেট থেকে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, তখন হামলার শিকার হন।
পরে নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তনুশ্রী দত্ত। মামলাটির তদন্ত চলছে।
যা হোক, যে আইটেম গানের শুটিং নিয়ে এত বিতর্ক, সেই ‘নাতনি উতারো’ গানটিতে তনুশ্রীর পরিবর্তে তখন যুক্ত হন রাখি সায়ন্ত। এ বিতর্কের শুরুর দিকে রাখি সায়ন্ত নানার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, নানার সম্মানহানি করতেই তনুশ্রী ‘মিথ্যা’ অভিযোগ করছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন রাখি।
ওই ‘বিশেষ’ সংবাদ সম্মেলনে রাখি বলেন, ১০ বছর ‘কোমায়’ থেকে এখন তনুশ্রী এসেছেন শ্রদ্ধাভাজন বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকারকে ‘কলঙ্কিত’ করতে। তনুশ্রী সম্পর্কে একাধিক ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যও করেন রাখি। বলেন, তনুশ্রীর শরীরে কি সোনা-হীরা বসানো যে ছোঁয়া যাবে না? আইটেম গানের নাচে একজন ভারত আর একজন পাকিস্তানে থেকে শুটিং করবে?
এর কিছুদিন পর, ‘তনুশ্রীর সমর্থকরা ফোনে হুমকি দিচ্ছে’, এমন অভিযোগ করে থানায় অভিযোগপত্রও দাখিল করেন রাখি সায়ন্ত।
তবে রাখির অভিযোগের জবাব দিতে তনুশ্রী দত্ত তাঁর বিরুদ্ধে ১০ কোটি রুপির মানহানি মামলা করেছেন। তনুশ্রীর আইনজীবী নিতিন সতপুতি রিপাবলিক টিভিকে বলেছেন, তাঁর মক্কেলের ‘চরিত্র ও ভাবমূর্তি’ ক্ষুণ্ণ করায় রাখি সায়ন্তর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে।
তনুশ্রীর ১০ কোটি রুপির মানহানি মামলার প্রতিক্রিয়ায় রাখি তাঁর বিরুদ্ধে ৫০ কোটি রুপির মানহানি মামলা করার হুমকি দিয়েছেন।
যা হোক, যৌন হেনস্তার অভিযোগের ওঠার পর ‘হাউসফুল-৪’ ছবি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন নানা পাটেকার। সিনে অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টিস্ট’স অ্যায়োসিয়েশন (সিনটা) তাঁকে অভিযোগের ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলে। সিনটাকে নানা উত্তর বলেছেন, তনুশ্রীর অভিযোগ ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘বিদ্বেষপ্রসূত’। সূত্র : বলিউড বাবল।