‘চরিত্রহীন’ বলায় ২৫ পয়সা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা
‘অশিক্ষিত’, ‘চরিত্রহীন’সহ আরো ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করায় ২৫ পয়সা ক্ষতিপূরণ চেয়ে এবার তনুশ্রী দত্তর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন রাখি সায়ন্ত। এর আগে রাখির বিরুদ্ধে ১০ কোটি রুপির মানহানি মামলা করেছিলেন তনুশ্রী। এর জবাবে রাখি ৫০ কোটি রুপির মানহানির মামলা করবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন।
তনুশ্রী দত্ত ও রাখি সায়ন্তর কাদা ছোড়াছুড়ি চলছেই। বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে তনুশ্রীর যৌন হেনস্তার অভিযোগের পর গোটা বলিউডে শুরু হয় যৌন নিপীড়নবিরোধী ‘হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন’। অনেকেই তনুশ্রীকে সমর্থন করেছেন, বলেছেন নিজেদের অভিজ্ঞতাও। আবার কেউ চুপচাপ এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু প্রথম থেকেই তনুশ্রীর বিরোধিতা করে আসছেন রাখি সায়ন্ত।
নানা পাটেকারের ঘটনা প্রকাশ্যে আনার পর রাখির ক্রমাগত বিরোধিতা দেখে তাঁর বিরুদ্ধে ১০ কোটি রুপির মানহানি মামলা করেন তনুশ্রী। তার পরিপ্রেক্ষিতে তনুশ্রীর বিরুদ্ধে ৫০ কোটি রুপির মানহানি মামলা করবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন রাখি।
সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে ‘বিতর্ক রানি’ রাখি সায়ন্ত দাবি করেন, সমকামী তনুশ্রী নাকি তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। এমনকি শরীরে নারী হলেও তনুশ্রী অন্তরে পুরুষ। শুধু তাই নয়, তনুশ্রী মাদকাসক্ত বলেও দাবি রাখির।
রাখির দাবি, ‘১২ বছর আগে তনুশ্রী আমার প্রিয় বন্ধু ছিল। বিভিন্ন রেভ পার্টিতে (পানাহারসহ রাতভর চলা নাচ-গান) আমরা যেতাম। সেখানে তনুশ্রী প্রচুর ড্রাগ নিত। আমাকেও ড্রাগ নিতে বাধ্য করত। ও আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় খারাপভাবে হাত দিত। বলিউডে অনেক সমকামী রয়েছে। তনুশ্রীও সমকামী।’
জবাবে রাখিকেও একহাত নেন বঙ্গতনয়া তনুশ্রী দত্ত। রাখির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তনুশ্রী বলেন, তিনি মাদকাসক্ত নন। আর নিশ্চিতভাবেই সমকামীও নন তিনি।
‘মা-বাবা সব সময় বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হতে বলতেন এবং আমি সেই উপদেশ মেনে বড় হয়েছি। এ ধরনের মানুষ এড়িয়ে চলি, মনে করি, আমার জন্য ভালো হবে না। তাই এটা খুবই বিরক্তিকর, যখন রাখি সায়ন্তর মতো অসভ্য, অশিক্ষিত, নোংরা, বাজার-পড়তি, শ্রেণিহীন, চরিত্রহীন, বিকৃতমনা, সবকিছু করতে পারা মানুষটি আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল বলে দাবি করে,’ বলেন ‘আশিক বানায়া আপনে’ অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত।
এর জবাবে গতকাল বুধবার তনুশ্রীর বিরুদ্ধে ২৫ পয়সার মানহানির মামলা করলেন রাখি। অভিযোগে রাখির দাবি, তনুশ্রী একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর নামে ইচ্ছাকৃতভাবে অমর্যাদাপূর্ণ কথা বলেন। সেখানেই তিনি নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে তাঁকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলেন।
মুম্বাইয়ের মালাদের একটি দেওয়ানি আদালতে করা মামলায় রাখি বলেন, তিনি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে নাম ও ক্যারিয়ার অর্জন করেছেন। তনুশ্রীর ক্যারিয়ার নড়বড়ে ও হতাশাজনক এবং মাত্র পাঁচ বছর স্থায়ী হয়েছে। লাইমলাইটে ফিরেই তিনি রাখির নামে অমর্যাদাপূর্ণ উক্তি করেন। ফলে রাখির অনেক টাকা ও খ্যাতির ক্ষতি হয়, যা তিনি অনেক বছর ধরে তৈরি করেছেন।
তনুশ্রীর ‘অসভ্য’, ‘অশিক্ষিত’, ‘চরিত্রহীন’, ‘শ্রেণিহীন’ শব্দগুলো তাঁর জন্যই ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রাখির। তিনি আদালতে আবেদন জানান, তাঁর সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য তনুশ্রী যেন তাঁকে পঁচিশ পয়সা ক্ষতিপূরণ দেন এবং লিখিতভাবে সামাজিক মাধ্যম ও টিভিতে ক্ষমা চান।
রাখির আইনজীবী বলেছেন, আদালত এখনো শুনানির দিন ধার্য করেননি।
যা হোক, শুধু নানা পাটেকারই নন, পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধেও যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন তনুশ্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘চকলেট’ ছবির শুটিং সেটে সবার সামনেই বিবেক তাঁকে পোশাক খুলে নাচতে বলেছিলেন। পরে নানা পাটেকার ও বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন তনুশ্রী দত্ত। মামলার তদন্ত চলছে। সূত্র : এনডিটিভি ও হিন্দুস্তান টাইমস।