হাজির বিরিয়ানির গান নিয়ে ব্যাখ্যা চাইল সেন্সর বোর্ড
এবার ‘হাজির বিরিয়ানি’ গানটির কথা ‘অশ্লীল ও আপত্তিকর’ বলে জানাল খোদ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। এর আগে সিয়াম ও পূজা অভিনীত ‘দহন’ ছবির এ গানটি নিয়ে সংগীতাঙ্গনের অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘গানটি সেন্সরবিহীন এবং গানের কথা অশ্লীল ও আপত্তিকর।’ সেন্সরবিহীন এই গান ইউটিউবে প্রদর্শনের ব্যাপারে ‘দহন’ ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড।
জাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্বাধিকারী বরাবর চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ আলী সরকার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সেন্সর সনদপত্র প্রাপ্তির পূর্বেই নির্মাণাধীন ‘দহন’ নামক চলচ্চিত্রের ‘হাজির বিরিয়ানি, মালে ঢাল পানি’... শীর্ষক গানটি ইউটিউবে প্রদর্শন করা হচ্ছে। গানটি সেন্সরবিহীন এবং গানের কথা অশ্লীল ও আপত্তিকর।”
চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘সেন্সরবিহীন গান প্রদর্শন ১৯৬৩ সালের চলচ্চিত্র সেন্সরশিপ আইনের (সংশোধিত ২০০৬) ৬ (এ) ধারার পরিপন্থী এবং একই আইনের ৮(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
সেন্সরবিহীন গান প্রদর্শনের দায়ে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তিনদিনের মধ্যে তার ব্যাখ্যা দিতে জাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্বাধিকারী আবদুল আজিজকে নির্দেশ দিয়েছে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড।
‘হাজির বিরিয়ানি’ গানটির কথা লিখেছেন ভারতের কলকাতার প্রিয় চট্টোপাধ্যায়। সংগীত পরিচালনা করেছেন ও গেয়েছেন কলকাতার আকাশ সেন।
‘দহন’ ছবির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম ও পূজা। এই মাসে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা। এই জুটির প্রথম সিনেমা ‘পোড়ামন-২’ এ বছরের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায়।
জাজ মাল্টিমিডিয়ার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ অক্টোবর ‘হাজির বিরিয়ানি’ গানটি প্রকাশ করা হয়। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ২১ লাখ ৬১ হাজার ৮৭১ দর্শক গানটি দেখেছে। গানটির পক্ষে-বিপক্ষে ছয় হাজার ২৯৫টি মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল গানটি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, ‘এই দেশের সব দেয়ালেই ৩০ লাখ শহীদের রক্ত লেগে আছে। সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা এমন অশ্লীল কথার গানের ছাড়পত্র দিলে তাঁদের ছবি ফেসবুকে তুলে ধরা হবে। বাবা শব্দের মানে হচ্ছে ইয়াবা, বর্তমান সরকার এই মরণনেশার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এই অসামাজিক গান বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হোক।’
কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘গান একটি চলচ্চিত্রের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি চলচ্চিত্র মুক্তির আগে যখন সেটা সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়ার জন্যে বোর্ডে জমা দেওয়া হয় তখন গানসহ পুরো ছবিটাই জমা দেওয়া হয়। গানগুলোকে তখন বোর্ডের সদস্যরা দেখে আপত্তিকর কিছু থাকলে বাদ দেন, এবং এটাই নিয়মের মধ্যে পড়ে। কিন্তু এখন ছবি মুক্তির মেলা আগেই যে গান মুক্তি দেওয়ার রীতি চালু হয়েছে, এটা কি সেন্সরবোর্ড আইনের আওতায় পড়ে? সেই গান কি বোর্ডের কোনো সদস্য দেখে অনুমোদন দিয়েছেন? যদি গান মুক্তির আগে অনুমোদন নেওয়া হতো তাহলে দেয়ালে হিসু দেওয়ার মতো বীভৎস গান হয়তো প্রকাশ পেত না।’