বন্ধুই কি ফাঁস করেছে অক্ষরার গোপন ছবি?
কিছুদিন আগে ভয়াবহ সাইবার অপরাধের কবলে পড়েন বলিউড অভিনেত্রী অক্ষরা হাসান। তাঁর বেশ কিছু ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মুম্বাই পুলিশ অক্ষরারই এক বন্ধুকে ডেকে পাঠিয়েছেন, যাঁর কাছে ওই ছবিগুলো পাওয়া গেছে।
এর আগে ব্রিটিশ মডেল ও অভিনেত্রী এমি জ্যাকসনের ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়েছিল। দক্ষিণী চলচ্চিত্রের সুপারস্টার রজনীকান্ত ও বলিউডের ‘মিস্টার খিলাড়ি’ অক্ষয় কুমারের সঙ্গে আসন্ন এশিয়ার সবচেয়ে বড় বাজেটের ‘২.০’ ছবিতে অভিনয় করেছেন এমি। এমির পর সাইবার অপরাধের শিকার হন অক্ষরা হাসান।
অক্ষরা ভারতের বিশিষ্ট অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার ও নির্মাতা কমল হাসানের ছোট মেয়ে এবং অভিনেত্রী শ্রুতি হাসানের ছোট বোন।
অক্ষরার অজান্তেই তাঁর অন্তর্বাস পরিহিত ছবিগুলো অন্তর্জালে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় অক্ষরা ও তাঁর ভক্তরা হতভম্ব হয়ে পড়েন। সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় কথা চালাচালি। কেউ বলেছেন হয়তো মুঠোফোন হ্যাকড হয়েছে অক্ষরার, আবার কেউ মুখ বাঁকিয়ে বলেছেন হয়তো প্রচারণার জন্য অক্ষরা নিজেই তা করেছেন!
পরে মাইক্রো-ব্লগিং সাইট টুইটারে অক্ষরা একটি বিবৃতি দেন। বলেন, পুরো ঘটনায় ভীত হয়ে পড়েছেন তিনি। মুম্বাই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও দেন অক্ষরা।
অভিযোগের পর পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। অক্ষরার এক বন্ধুকে ডেকে পাঠায় পুলিশ। তাঁর কাছে অক্ষরার ব্যক্তিগত ছবিগুলো পাওয়া গেছে।
সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, ‘তাঁর (অক্ষরা) বন্ধুর কাছে ওই ছবিগুলো পাওয়া গেছে। অক্ষরার ফোন পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এর পর তিনি নতুন ফোন কেনেন। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর বন্ধুকে ডেকেছি। যা হোক, তাঁর জড়িত থাকার ব্যাপারটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
হিন্দুস্তান টাইমসের ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অক্ষরার ওই ছবিগুলো ২০১৩ সালে তোলা। তখন তিনি আইফোন-৬ ব্যবহার করতেন।
ব্যক্তিগত ছবি ফাঁসের ঘটনায় খবরের শিরোনাম হলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেন অক্ষরা। বলেন, অজ্ঞাত ব্যক্তি/ব্যক্তিরা এ ঘটনার জন্য দায়ী।
অক্ষরা লেখেন, ‘সম্প্রতি, আমার কিছু গোপন ছবি অন্তর্জালে ফাঁস হয়েছে। কে এটা করল, কেন এটা করল, তা আমার জানা নেই। কিন্তু আমি এটা জানি যে, দুর্ভাগ্যজনক এ ঘটনায় এক তরুণী ভিকটিম হয়েছে, কারো বিকৃত মনের আনন্দের জন্যই এটা করা হয়েছে। প্রত্যেকবারই চোখ-ধাঁধানো শিরোনাম দিয়ে অনেকে শেয়ার করেছে, এটা আমাকে খুব ভীত করে তুলেছে—হেনস্তা ও আমার অসহায়ত্বে এদের সবার অংশগ্রহণ ছিল।’
‘এটা খুবই বিরক্তিকর ও হতাশার, যখন পুরো জাতি হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলনে জেগে উঠেছে, ঠিক তখন কিছু মানুষ এক তরুণীকে হেনস্তা করার জন্য ব্যক্তিগত ছবি জনসমক্ষে এনেছে, শুধু তাদের বিকৃত আনন্দের জন্য,’ যোগ করেন অক্ষরা।
অক্ষরা হাসান ‘শমিতাভ’ ছবি দিয়ে বলিউডে অভিনয়যাত্রা শুরু করেন। এ ছবিতে ছিলেন বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন ও দক্ষিণী তারকা ধানুশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতিসত্বর হ্যাকারদের খুঁজে বের করা এবং সাইবার আইন অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি হওয়া দরকার। তারকা হোক, আর সাধারণ মানুষ হোক, সবারই ব্যক্তিগত সুরক্ষার জায়গাটি নিশ্চিত করা জরুরি। সূত্র : ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস।