এফডিসিতে আমজাদ হোসেনের নামে স্থাপনা চান ছেলে দোদুল
আমজাদ হোসেন, মঞ্জুর হোসেন, সাইদুল আনাম টুটুল এবং এ আর রহমান আর নেই। বছরের শেষে এই ডিসেম্বরে মারা যান তাঁরা। এফডিসিতে আজ দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির আয়োজনে গুণী এই চার পরিচালকের স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
সে সময় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম, সালাউদ্দিন লাভলু, এ টি এম শামসুজ্জামান, খোরশেদ আলম খসরু, মামুনুর রশীদ, বদিউল আলম খোকন, এস এ হক অলিক প্রমুখ।
এ টি এম শামসুজ্জামান বলেন, ‘আমজাদ হোসেন বেঁচে আছেন। তাঁর কর্মই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আমরা এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে পারলে আমাদের চলচ্চিত্র আরো এগিয়ে যাবে। উনি সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি অনেক গল্প, উপন্যাস লিখেছেন। আমরা সেই গল্প উপন্যাস নিয়ে কাজ করলে আমাদের চলচ্চিত্র আরো সমৃদ্ধ হবে।’
মামুনুর রশীদ বলেন, ‘অসাধারণ কাজ আমজাদ হোসেনকে বাঁচিয়ে রাখবে। তিনি চলচ্চিত্রে নিজস্ব একটি ধারা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এই কালজয়ী মানুষগুলো সারা জীবন কাজ করতে পারেন না। একটি সময় এসে উনাদের কাজ কমে যায়। এ জন্য চলচ্চিত্রের মতো মাধ্যমগুলোতে ধস নামে। আমি আশা করব, তরুণ প্রজন্ম আমজাদ হোসেনের কাজ নিয়ে চর্চা করবে।’
সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘এই ডিসেম্বর মাসটি আমাদের জন্য শোকে পরিণত হয়েছে। একের পর গুণী মানুষগুলো আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। উনারা আমাদের কাছে সব সময় অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।’
প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘আমি যখন ছাত্র ছিলাম, তখন থেকেই আমজাদ হোসেনের পরিবারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। উনার ছেলে দোদুল আমরা বন্ধু। উনার অনুপ্রেরণায় নাটক নির্মাণ শুরু করি। এখন পর্যন্ত চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি ২৮টি। আমার আরেকজনের কথা মনে পড়ে—এ আর রহমান। তিনি আমার এই ২৮টি ছবির মধ্যে বেশির ভাগ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। অনেক ভদ্র একটা মানুষ ছিলেন। সবাই দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাঁদের সবাইকে ভালো রাখেন।’
অনুষ্ঠানে আমজাদ হোসেনের নামে একটি স্থাপনা চান তাঁর বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল। তিনি বলেন, ‘আমরা বাবা সারা জীবন এফডিসিতে কাজ করেছেন। তাঁর জীবনের বড় অংশ কেটেছে এই এফডিসিতে। সারা জীবন তিনি চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করেছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর সবাই তাঁকে যেভাবে সম্মানিত করল, আমি ছেলে হিসেবে সবার কাছেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাবা যদি কোনো কাজে ভুল করে থাকেন, সে জন্য আমি ক্ষমা চাই। ছেলে হিসেবে আমি বাবার জন্য আপনাদের কাছে কিছু চাই। তা হলো এফডিসিতে আবার বাবার নামে যেন একটি স্থাপনা হয়।’
ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমজাদ হোসেন চর্চা কেন্দ্র করতে চান জানিয়ে দোদুল বলেন, ‘আমি চাই বাবা তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকুক। বর্তমান প্রজন্ম তাঁকে নিয়ে যেন চর্চা করতে পারে, এ জন্য আমি আমজাদ হোসেন চর্চা কেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা করছি। আশা করছি, সবাই আমার পাশে থাকবেন। আমজাদ হোসেন সব সময় জীবনঘনিষ্ঠ ছবি নির্মাণ করেছেন। নতুন প্রজন্ম তাঁর কাজের ধারা থেকে সময় উপযোগী ভাবনা প্রকাশ করতে পারবেন বলে আমি মনে করি। ’
এদিকে, এফডিসিতে আমজাদ হোসেনের স্থাপনার নামকরণ নিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘আমজাদ হোসেনের নামে এফডিসিতে অবশ্যই কোনো স্থাপনার নামকরণ করা হবে। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে আসব। সে ক্ষেত্রে একটি ফ্লোরের নামকরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’